সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

১০ জুন, ২০১৯ ১২:৩৩

সুনামগঞ্জে শিশু ধর্ষণের পর চিকিৎসা নিতেও বাধা

সুনামগঞ্জ শহরের মল্লিকপুরে এক দিনমজুর বিধবা নারীর প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে চকলেট দেওয়ার কথা বলে বসতঘরে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে এক বখাটে। ধর্ষণের পর চিকিৎসাসেবা নিতেও বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ধর্ষকের পরিবারের বিরুদ্ধে। আইনি সহায়তা না নিতেও দেওয়া হচ্ছে হুমকি।
 
রোববার (৯ জুন) রাতে মহিলা পরিষদ ও স্থানীয় কাউন্সিলরের সহায়তায় শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পরিবার ও সুনামগঞ্জ মহিলা পরিষদ জানায়, শহরের মল্লিকপুরে বিধবা দিন মজুরের ছয় বছরের শিশুটিকে শনিবার রাত ৮টার দিকে ঘরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে প্রতিবেশী তেরাব আলীর ছেলে রুহুল আমিন (১৯)।

এরপর ধর্ষণের কথা কাউকে না বলার জন্য ভয়ভীতি দেখিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। যন্ত্রণা হলেও বখাটের ভয়ে সে ঘটনাটি মাকে জানায়নি।

কিন্তু শারীরিক যন্ত্রণা সইতে না পেরে শিশুটি রোববার বিকালে প্রতিবেশী ভাবির কাছে ঘটনাটি খুলে বলে। তখন ভাবি তার মাকে ঘটনাটি জানায়।

এ সময় তিনি মেয়েকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসতে চাইলে রুহুল আমিনের বাবা, মা, বোন ও বোন জামাই তাদেরকে হাসপাতালে আসতে বারণ করে। এক পর্যায়ে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে।

আশপাশের মানুষ জড়ো হলে তারা অসুস্থ মেয়েকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলেন। খবর পেয়ে সুনামগঞ্জ মহিলা পরিষদ ও স্থানীয় কাউন্সিলর শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং শিশুটির মাকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেয়।

অবশেষে রোববার (৯ জুন) রাত ৮টার দিকে শিশু কন্যাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন মা। এদিকে মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর ধর্ষকের পরিবার হুমকি ধমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত ৮টার দিকে নিজ বসতবাড়ির রাস্তায় ছিল বিধবা দিনমজুর নারীর পিতৃহীন কন্যা। এ সময় প্রতিবেশী তেরাব আলীর বখাটে ছেলে রুহুল আমিন (১৮) ওই শিশুকে চকলেট দেওয়ার কথা বলে তার বসতঘরে ডেকে নেয়। এ সময় ওই বসতঘরে কেউ ছিল না। এই সুযোগে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। আসার সময় এ ঘটনা কাউকে খুলে না বলার জন্য হুমকি দেয়। ওই শিশুকন্যা বসতঘরে এসে রাতে ঘুমিয়ে পড়ে। রাতে তার প্রচণ্ড জ্বর ওঠে ও ব্যথা শুরু হয়।

দিনমজুর বিধবা মা ঘটনা জানতে চাইলে সে বখাটের হুমকির বিষয়টি ভেবে চেপে যায়। রোববার বিকেলে প্রতিবেশী চাচাতো ভাইয়ের বউয়ের কাছে এ ঘটনা খুলে বললে ওই নারী তাৎক্ষণিকভাবে শিশুর মাকে বিষয়টি জানান।

এ ব্যাপারে পৌরসভার কাউন্সিলর আহমেদ নূর বলেন, ঘটনাটি জানার পর তাকে হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দিয়ে সব রকমের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি।
 
সুনামগঞ্জ সদর থানার ওসি মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়ে শিশুটির চিকিৎসা নিশ্চিত করেছি। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানোরও নির্দেশ দিয়েছি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত