জাহাঙ্গীর আলম খাযের, বিশ্বনাথ

১১ জুন, ২০১৯ ০২:০২

পাওনা টাকা চাইতে গিয়েই খুন হন বিশ্বনাথের আ. লীগ নেতা

পাওনা টাকা চাওয়ায় মৎস্য খামারের কেয়ারটেকার জমির হোসেনের (৩৫) হাতেই নির্মমভাবে খুন হন সিলেটের বিশ্বনাথের দিক্ষণ সৎপুরের বাসিন্দা উপজেলা আ’ লীগ নেতা আহমদ আলী (৫৫)। গত শুক্রবার রাতে তার নিজ মৎস্য খামারের পুকুর থেকে পুলিশ আহমদ আলী লাশ উদ্ধার করে। পর ময়নাতদন্ত শেষে ওইদিন সন্ধ্যা ৬টায় জানাযা শেষে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।

ঘটনার পর থেকে পলাতক থাকা একই গ্রামের জমিরকে রোববার সকালে জাহারগাঁও থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়। ওইদিন থানায় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সিলেটের সিনিয়র জ্যুডিশিয়াল মেজিষ্ট্রেট হারুনুর রশীদ’র আদালতেও ১৬৪ধারা জবানবন্ধিতে স্বীকারুক্তি দেয় জমির। তার স্বীকারুক্তির ভিত্তিতে পুরান সৎপুরের সাবেক মেম্বার মতিউর রহমান ওরফে আব্দুল মতিনকেও (৬৪) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রোববার সন্ধ্যায় কালিগঞ্জ বাজার থেকে গ্রেপ্তারের পর রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোমবার (১০জুন) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকেও জেলহাজতে পাঠানো হয়।

এরআগে রোববার জমিরকে প্রধান আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহতের বড়ভাই সিকন্দর আলী, (মামলা নং ৬)। মামলায় দেওকলস ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাছুম আহমদ মারুফ (৩৮), তার বড়বোন তছনের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৪২), জামায়াত নেতা আব্দুল কাইয়ূমসহ (৩৫) ৭জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৩/৪জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি রাখা হয়েছে।

স্থানীয় ও এজাহার সূত্রে জানাগেছে, কেয়ারটেকার জমিরের কাছে ২লাখ আর ফিশারির পশের বাড়ির ফাতেমার কাছে ১০লাখ টাকা পাওনা ছিল নিহত আহমদ আলীর। দেনা-পাওনা নিয়ে মালিক ও কর্মচারীর মধ্যে ফাতেমার বাড়িতে একাধিকবার বাকবিতন্ডা হয়েছে এবং জমিরকেও দু’বার ফিশারি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। ফিশারির কাছে ফাতেমার বাড়ি হওয়ায় কেয়ারটেকার ও তার মালিক আহমদ আলী ওই বাড়িতেই বেশিরভাগ সময় কাটাতেন। পাওনা টাকা দিতে দু’জনেই কালক্ষেপন করায় সম্প্রতি ফাতেমা ও তার কেয়ারটেকার জমিরকে পাওনা টাকা পরিশোধে চাপ সৃষ্টি করেন আহমদ আলী। অন্যদিকে এলাকায় সালিশ বৈঠকে ন্যায় বিচার করায় দীর্ঘদিন ধরে আহমদ আলীর বিরুদ্ধেও একটি পক্ষ অবস্থান নেয়। স্থানীয় সালিশ বৈঠক নিয়ে রাজারবাজারসহ ওই এলাকায় শুরু হয় আধিপত্যের লড়াই। আর ওই আধিপত্যের লড়াইয়ে যোগদেন তার কেয়ারটেকার জমির হোসেন ও ফাতেমা বেগম। ফলে পাওনা টাকা না দেওয়া আর একক আধিপত্যের কারণেই পরিকল্পিতভাবে ফাতেমার বাড়িতে কেয়ারটেকার জমিরের নেতৃত্বে আহমদ আলীকে হত্যা করা হয়। পরে তার লাশ তার নিজের ফিশারির পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়।

১৬৪ধারা জবানবন্দি ও মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্বনাথ থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম ও মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই লিটন রায়। তারা বলেন, পাওনা টাকা চাওয়াতেই ফিশারির কেয়ারটেকার এবং ওই চক্রের হাতে প্রাণ হারাণ আহমদ আলী। বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত আছে বলেও তারা জানিয়েছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত