কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

১৬ জুন, ২০১৯ ১৯:০৫

কমলগঞ্জে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বসতভিটা

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ধলাই নদীর বাঁধ ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বসত-ভিটাসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দ্রুত গতিতে বাঁধ নির্মাণ না হলে অচিরেই নদীগর্ভে কমলগঞ্জ পৌর এলাকার রামপাশা, কমলগঞ্জ আইডিয়াল হাই স্কুলসহ নদী পাড়ের বসতভিটাগুলো ভাঙ্গনে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক-ছাত্র ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে নদী ভাঙ্গন রোধে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের একাধিক বার জানানো হলেও এখনও কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

সরজমিনে দেখা গেছে, কমলগঞ্জ পৌর এলাকার রামপাশা গ্রামে ভাঙন তীব্র হচ্ছে। এখানে বেশ কয়েকটি বসতবাড়ি খুব ঝুঁকিতে রয়েছে। ইতোমধ্যে ভাঙনের কবলে পাড়ে প্রায় অর্ধেক গ্রামের জায়গা জমি চলে গেছে নদীর ওপর পাড়ে। ভিটা ছাড়া হয়েছেন অনেক পরিবার। সিমেন্টর তৈরি বর্গ দ্বারা পাড় ভাঙ্গা এ অংশটুকু বাঁধ দেওয়া না হলে এক সময় আর রামপাশা গ্রাম থাকবে না বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

৬ নং ওয়ার্ডে ধলাই নদীর তীরবর্তী বসতভিটাসহ নদীর তীরে অবস্থিত কমলগঞ্জ আইডিয়াল হাই স্কুলের পিছনদিকে ধলাই নদীর বাঁধটির ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। কিন্তু এসব বাঁধ ভাঙ্গনের বিপরীতে কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। ১৯৯৩ সালে স্থাপিত হয় কমলগঞ্জ আইডিয়াল হাই স্কুল। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির পিছনদিকে ধলাই নদীর বাঁধটির ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ফলে স্কুলের ৪শতাধিক শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

রামপাশা গ্রামের ব্যবসায়ী মিন্টু মালাকার ও চাকুরীজীবি প্রসেনজিত পাল জানান, রামপাশা গ্রামের বাসিন্দাগণ নিজের বসত ভিটা বাঁচাতে নিজেই বাঁধ রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। ধলাই নদীর প্রবল ভাঙ্গনে রামপাশা গ্রামের এক অংশ ওপারে গিয়ে মিশেছে। বৃষ্টি হলেই ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি পায়, ভেঙ্গে নিয়ে যায় জায়গা জমি বসত ভিটা গাছগাছালি। এবার ভাঙ্গন দিলে পানিতে তলিয়ে যাবে সারা গ্রাম। এর একটা স্থায়ী সমাধান না হলে ক্ষতি হবে রামপাশাবাসীর।  

কমলগঞ্জ আইডিয়াল হাই স্কুলের সভাপতি সৈয়দ ইব্রাহীম মোহাম্মদ আব্দুহু ও প্রধান শিক্ষক মাসুক আহমেদ জানান, ‘প্রতিবছর বাঁধ মেরামতের জন্য বরাদ্দ আসলে স্কুলের মাঠ থেকে মাটি কেটে বাঁধ নির্মাণ করা হয়, কিন্তু তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে কাজের কাজ কিছুই হয়না। বরং স্কুলের মাঠ ভরাট করতে হিমশিম খেতে হয়। জরুরী ভিত্তিতে বাঁধ মেরামত না করলে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে আইডিয়াল স্কুলটি ও আশপাশের বসতভিটা। অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে ৪শতাধিক শিক্ষার্থী।’

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন,  সরজমিন ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক জানান, এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে আলোচনা হয়েছে।  ভাঙ্গা বাঁধ মেরামতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বলা হয়েছে।



আপনার মন্তব্য

আলোচিত