কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

২৩ জুন, ২০১৯ ১৫:৩২

এমপি শহীদকে হত্যার হুমকি: নিজেকে নির্দোষ দাবি ব্যবসায়ীর

সাবেক চিফ হুইপ ও মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদকে হত্যার হুমকিস্বরুপ উড়োচিঠিতে ষড়যন্ত্রমূলক ফাঁসানো চেষ্টার প্রতিবাদে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার বৃন্দাবনপুর রাজদিঘীরপার বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. ফজলুর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, জীবন ও জীবিকার তাগিদে রাজদিঘীরপার বাজারে দীর্ঘদিন থেকে সুনামের সাথে ছোট একটি ব্যবসা পরিচালনা করছেন ও তার সাথে কারো পূর্ব শত্রুতা বা বিরোধ নেই।

রোববার (২৩ জুন) সকাল সাড়ে ১১টায় কমলগঞ্জ সাংবাদিক সমিতির শমশেরনগরস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফজলুর রহমান জানান, সাবেক চিফ হুইপ ও মৌলভীবাজার-৪ আসনের ৬ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদকে হত্যার উড়োচিঠিতে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান-জামিমা স্টোর থেকে বিকাশসহ বিভিন্ন হুন্ডির মাধ্যমে লন্ডন ও আমেরিকা থেকে টাকার ব্যবস্থা হচ্ছে বলে তার নাম ব্যবহার করার প্রতিবাদ জানান সংবাদ সম্মেলন থেকে।

হত্যার হুমকির উড়োচিঠির বিষয়টি কয়েকটি মুদ্রণ, অনলাইনসহ সোশ্যাল মিডিয়াতে তাকে ও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

ফজলুর রহমান জানান, ওই উড়োচিঠি তাকে ফাঁসানোর জন্য তার শত্রুপক্ষ এই ষড়যন্ত্র করছে। তিনি উড়োচিঠির বিষয়ে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে তদন্তপূর্বক প্রকৃত হুমকিদাতাকে খোঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদে ফজলুর রহমান ও তার মালিকানাধীন রাজদিঘীরপার বাজারের জামিমা স্টোরকে জড়িয়ে একটি চিঠির বরাত দিয়ে আমার পার্শ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্দা আমার শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষাগুরু মৌলভীবাজার-৪ (কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল) আসনের ছয় বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ড. মো. উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদকে একটি উড়োচিঠিতে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্রে টাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে মর্মে আমার প্রতিষ্ঠান জামিমা স্টোর এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক। তিনি এর তীব্র নিন্দা ও জোর প্রতিবাদ জানান ও এ ধরনের নিকৃষ্ট কর্মকাণ্ডের সাথে তিনি বা তার পরিবারের কোন সম্পর্ক কখনও ছিলো না ও বর্তমানেও নেই।

চিঠির ভেতরে তার নাম ব্যবহার করে একজন সংসদ সদস্যকে হত্যার হুমকি প্রদানের পর তিনি সামাজিকভাবে ও আইনগতভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা তাকে নানাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করছে। এতে করে তিনি ও তার পরিবার মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। তিনি তদন্তের বিষয়ে সংস্থাগুলোকে সহযোগিতাও করছেন বলে জানান।

ফজলুর রহমান আরও বলেন, তিনি ইতিপূর্বেও ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের স্বীকার হয়েছেন। চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি ষড়যন্ত্রকারীদের প্ররোচনায় পুলিশ তাকে এবং নন্দগ্রামের আবুবক্কর ও ইমরান আহমদকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসেন। কোনো মামলা ছাড়াই তাদের গ্রেপ্তার করায় পুলিশকে চ্যালেঞ্জ করলে পুলিশ জানায়, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকার কদমতলী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতনের একটি মামলায় পরোয়ানা রয়েছে। মামলার বাদীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে বিষয়টি ভুয়া বলে চ্যালেঞ্জ করলে পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়। ভুয়া মামলার এই ঘটনার চার মাস পর ষড়যন্ত্রকারীরা আবারো ফজলুর রহমানকে জড়িয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যের নামে উড়োচিঠি প্রদান করে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ইউপি সদস্য এনাম উল্যাহ, ফজলুর রহমানের ছোট ভাই জগলুর রহমান, চাচাতো ভাই মবশ্বির আলী, আত্মীয় ডা. আব্দুস শহীদ সাগ্নিক প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, ১৩ জুন উড়োচিঠি সংসদ সদস্যের শ্রীমঙ্গলস্থ বাসার ঠিকানায় ডাক বিভাগ থেকে পৌঁছে। অনুরূপ একটি চিঠি এসেছে কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবরে। চিঠিতে প্রেরকের নাম সুজন মিয়া, কদমতলী সিলেট উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর থেকে কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সব সংগঠন প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে আসছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত