ছাতক প্রতিনিধি

২৫ জুন, ২০১৯ ২০:২২

ছাতকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে জড়িত ২ ব্যক্তি আটক

সুনামগঞ্জের ছাতকের সোনাই নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছ পুলিশ। মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকালে উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বৈশাকান্দি সোনাই নদী থেকে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হল বৈশাকান্দি-বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা খুরশিদ মিয়া ও নুরুন্নবী। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ছাতক থানার এসআই জহিরুল ইসলাম তাদের আটক করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোনাই নদীতে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও উত্তোলনকারীদের কাছ থেকে রয়েলিটির কথা বলে চাঁদা আদায় করছে একটি সিন্ডিকেট। ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত সোনাই নদীর রাবার ড্যাম এলাকায় চলে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। প্রতিদিন শতাধিক নৌকা উত্তলিত বালু নিয়ে বিভিন্ন কার্গো-বাল্কহেডে লোর্ডিং করছে। এসব নৌকা থেকে ৫০০-৭০০ টাকা করে রয়েলিটির কথা বলে চাঁদা আদায় করছে সিন্ডিকেট চক্র। প্রতিদিন বালু উত্তোলন করার ফলে সোনাই নদীর তীরে অবস্থিত বাহাদুর পুর ও বৈশাকান্দি গ্রাম পড়েছে নদী ভাঙ্গনের কবলে। পাশাপাশি কৃষি বিভাগের তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাবার ড্যাম পড়েছে মারাত্মক হুমকির মুখে।

এর আগে সোনাই নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে একলাবাসীর পক্ষে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদির ২২ মে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সরজমিনে গিয়ে সোনাই নদীতে বালু উত্তোলন বাঁধা-নিষেধ দিয়ে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে তদারকি করার জন্য দায়িত্ব দেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, "সরকারী বাঁধা-নিষেধ থাকা সত্ত্বেও একদিনের জন্য বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি। স্থানীয়রা বালু উত্তোলনে বাঁধা দিলে সিন্ডিকেট চক্র তাদের চাঁদাবাজি মামলা দিয়ে জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়ে ভয় দেখায় বলে তারা জানান। স্থানীয় ইউনুছ আলী, নেকির হোসেন, বিলাল মিয়া, মুহাম্মদ আলী, মদরিছ আলী, রুমান আহমদসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হেকিম ও আব্দুল জব্বার খোকনের নেতৃত্বে বৈশাকান্দি-বাহাদুরপুর গ্রামের খুরশিদ মিয়া, মন্তা মিয়া, আব্দুর রহিম, হাবিবুর রহমান, কোম্পানীগঞ্জের আব্দুর রহিম, ছোহরাব হোসেন, রতন মিয়া হাবিবুর রহমানসহ ২০-২৫জনের একটি সিন্ডিকেট প্রতিদিন বালু নৌকা থেকে চাঁদা আদায় করছে। সিন্ডিকেটের লোকজন প্রচার করে আসছে যে তারা সরকারের কাছ থেকে সোনাই নদী ২০ লক্ষ টাকায় লিজ নিয়েছে। শ্রমজীবী মানুষকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে তারা প্রতি নৌকা থেকে ৫শ-৭শ’আদায় করছে। বর্তমানে সিন্ডিকেটের সদস্যদের চাঁদা দিয়ে সোনাই নদীতে চলছে জমজমাট বালু উত্তোলন। ফলে লাখ-লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। পাশাপাশি রাবার ড্যামসহ বাহাদুরপুর ও বৈশাকান্দি গ্রাম পড়েছে নদী ভাঙ্গনের হুমকিতে।"

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হেকিমের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে ছাতক থানার ওসি (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত