শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি

১৩ জুলাই, ২০১৯ ২০:৪৮

কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে শ্রীমঙ্গলের রাস্তাঘাট

মাত্র কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। শ্রীমঙ্গল শহরের হবিগঞ্জ সড়ক, মৌলভীবাজার সড়ক, স্টেশন সড়ক, চৌমোহনা চত্বর এলাকায় বৃষ্টির পানি রাস্তায় জমে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে শ্রীমঙ্গলবাসী।

এদিকে শনিবার (১৩ জুলাই) দুপুর থেকে শুরু হওয়া প্রবল বর্ষণে রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় পুরো শ্রীমঙ্গলে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার নাজুক চিত্র ফুটে উঠেছে বলে মনে করছেন এখানকার সাধারণ জনগণ।

হবিগঞ্জ সড়ক স্থানীয় ব্যবসায়ী রাসেল বলেন, "শ্রীমঙ্গল শহরের হবিগঞ্জ সড়ক, মৌলভীবাজার সড়ক, স্টেশন সড়কে রাস্তার দুই পাশে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানিতে ভরে উঠে। অনেক জায়গায় দোকানকোঠায় পানি ঢুকে পড়ে। শহরের চৌমোহনা চত্বর বৃষ্টির পানিতে ভরে যায়। সড়কগুলোর পাশে থাকা মার্কেটগুলোতে নোংরা পানি জমে একাকার হয়ে পড়ে।"

তিনি আরো বলেন, " হবিগঞ্জ সড়কে অস্থায়ী সিএনজি স্ট্যান্ড এলাকার অবস্থা খুবই শোচনীয়। এখানে সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু পানি হয়ে যায়। যাত্রীরা ময়লা পানি দিয়েই যানবাহনে চড়েন। সবচেয়ে বেশী সমস্যায় পড়ে শহরের হবিগঞ্জ সড়কের হানিফ কাউন্টারের সামনে থেকে চৌমোহনা পর্যন্ত রাস্তার পাশের ব্যবসায়ীরা। রাস্তার অর্ধেক অংশ পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণে লোকজন সড়কের মাঝখান দিয়ে চলাচল করতে থাকেন পথচারীরা এতে দুর্ঘটনার ভয় থাকে এবং ট্রাফিক জ্যাম এর সৃষ্টি হয়। এই সমস্যাটা নিত্যদিনের। পৌরসভার অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও পৌরসভার চরম উদাসীনতার কারণে দীর্ঘদিন থেকে এই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে আমাদের।"

শহরের বাসিন্দা কানন বৈদ্য বলেন, "দুপুর থেকে টানা বর্ষণে ডুবে গেছে শহরের বিভিন্ন সড়ক, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ঘরবাড়ি। শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় পানি নামছে ধীর গতিতে। বিশেষ করে শহরের ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে সবচেয়ে বেশী পানি জমে গেছে। ফলে জলাবদ্ধতার কারণে পথচারীরা পড়েছে চরম দুর্ভোগে।"

তিনি আরো বলেন, "পৌরসভা সঠিকভাবে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা করছে না বলেই দীর্ঘদিন থেকে এই সমস্যায় আমরা। সড়কের সাথে লাগোয়া অনেক জায়গায় ড্রেনের উপর স্লিপার না থাকায় অনেক অনেক সময় মানুষ অসাবধানতা বসত দুর্ঘটনায় পরেন। বৃষ্টি হলে এসব রাস্তা ড্রেন কিছুই বুঝা যায় না। সব জায়গায় পানি থাকে। তাছাড়া বৃষ্টি হলে শহরের রাস্তার ভাঙা যায়গাগুলোতে পানি ভরে যায়। মানুষ যানবাহন নিয়ে খুবই বিপদে পরে।"

শেখ সারোয়ার জাহান জুয়েল বলেন, "শহরের চার পাশে বয়ে চলা ছড়া যদি খনন না করা হয় তাহলে জনগণের জন্য আরো বড় ধরনের বিপদ অপেক্ষা করছে, আর কোন কোন ড্রেন পরিষ্কার করা করা না ঠিক মত যার কারণে এতো বাজে অবস্থা। শহরের কোন কোন এলাকার ড্রেন আছে বছরে একবারও ঠিক মত পরিষ্কার করা হয় না, সারা শহর জুড়ে ময়লার ভাগাড় যার কারণে ড্রেন ভরে গেছে। নেই ময়লা ফেলার ডাস্টবিন ফলে বাধ্য হয়েই লোকজন ড্রেনে ময়লা ফেলেন। পৌরসভার নগর পরিকল্পনাবিদের পরিকল্পনা বাস্তবসম্মত, সুদূরপ্রসারী এবং জনগণের প্রকৃত উন্নয়নের জন্য হয় না বলেই তা জনগণের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।"

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার প্যানেল মেয়র কাজী আব্দুল করিম বলেন, "আসলে জলাবদ্ধতার জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা দায়ী নয় আমরা সব সময়ই ড্রেনগুলো পরিষ্কার রাখি ৷" মুষলধারে বৃষ্টি নামার কারণে বৃষ্টির পানি নামতে পারছে না বলেও জানান তিনি, তবে কেন বৃষ্টির পানি নামতে পারছে না এ প্রশ্নটি এড়িয়ে যান তিনি।

এদিন শ্রীমঙ্গলে কি পরিমাণ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে সেই তথ্য জানতে শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিসে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কেউ ফোন রিসিভ করেন নি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত