অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় সুনামগঞ্জের সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, জামালগঞ্জ, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, দিরাই, শাল্লা ও ধর্মপাশা উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হয়েছে। সুরমা নদীর পানি প্রবেশ করেছে জেলা শহরের কয়েকটি এলাকায়। পাঠদান বন্ধ রয়েছে তিন শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।

সরকারি হিসেবে বন্যায় জেলার ৫২টি ইউনিয়নে ১ লাখ ৪ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুর ১২টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা রোববারের চেয়ে ১ সেন্টিমিটার বেশী।

গত ২৪ ঘণ্টায় ৮০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত বন্ধ হলে পানি কমবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

রাস্তাঘাট ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে অনেক এলাকা। সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর ও সুনামগঞ্জ-ছাতক সড়কের কয়েটি স্থান পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় জেলা শহরের সাথে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষজন।

বন্যার কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমজীবী, শিক্ষাথীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তবে অনেক বন্যার্ত মানুষজন জানিয়েছেন যে পরিমাণ চাল ও নগদ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। পানিবন্দি মানুষজনের মধ্যে খাবারের জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল জানান, আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাওরের জেলায় বানবাসী মানুষজনের জন্য প্রচুর পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন।

তিনি জানান, উপজেলা প্রশাসনের তরফ থেকে বন্যার্তদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী ও নগদ অর্থ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে সরকার সব ধরনের সহায়তা দিবে। সকল আশ্রয় কেন্দ্রগুলোও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
 
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক (অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক) মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বন্যাদুর্গত মানুষের মাঝে ৬৮৫ মেট্রিক টন জিআর এর চাল, নগদ ৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও ৮ হাজার ৪০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। সেই সাথে আরও ৫০০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ৫ হাজার ২৩৫ প্যাকেট শুকনা খাবার মজুদ রয়েছে জেলা প্রশাসনের কাছে।