মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

১৫ জুলাই, ২০১৯ ২০:৪৮

বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারে ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

মৌলভীবাজারের মনু, কুশিয়ারা ও ধলাই নদের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ সব নদ-নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে মৌলভীবাজারে প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। ইতোমধ্যে বন্যা দুর্গতের মধ্যে ত্রাণ সহায়তাও শুরু হয়েছে।

মৌলভীবাজারের মনু নদের চাঁদনীঘাট এলাকায় ৮৫, ধলাই নদীর পানি ২৪ এবং কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এসব নদ-নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে এবং পানি উপচে বাঁধের ভেতরে প্রবেশ করায় সদর উপজেলাসহ, রাজনগর, শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জের কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি। পানি ডুকেছে ২৫টি প্রাইমারী ও ১৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড পাউবো মৌলভীবাজার কার্যালয়সূত্র জানায়, রোববার (১৪ জুলাই) কমলগঞ্জের রহিম পুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামে ধলাই নদের প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। এর আগে কমলগঞ্জ পৌরসভার রামপাশা এলাকায় এবং আমদপুর ইউনিয়নের ঘোরামারা এলাকায় নদের প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন দিয়েছিলো। সেই ভাঙন দিয়ে পানি প্রবেশ করে রামপাশা, হকতিয়ারখোলা, ঘোরামারাসহ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়। এছাড়া ধলাই নদের প্রতিরক্ষা বাঁধ উপচে রহিমপুর ইউনিয়নের প্রতাপী, জগন্নাথপুর, জগনশালাসহ কয়েকটি গ্রামে পানি প্রবেশ করে ।

অন্যদিকে কুশিয়ার পানি বৃদ্ধি পেয়ে সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নে প্রায় ৩০০ পরিবার পানিবন্দি আছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান । শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিলাসপার এলাকায় পাহাড়ি ঢলে ছড়ার পানিতে ৫টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। রাজনগর উপজেলার ফতেহপুর, উত্তরভাগ ও কামারচাক ইউনিয়নে কুশিয়ারা ও ধলাই নদীর পানিতে আকস্মিক বন্যায় কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বলে জানা যায়।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক জানান, কমলগঞ্জের ২২টি গ্রামে পানি প্রবেশ করে প্রায় বিশ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। তাদের মাঝে ৪শ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ১৪ মেট্রিক টন চাল দেয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ঢল ও বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতায় জেলার ৪৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন । তাদের মাঝে ৩৬ মেট্রিকটন চাল ও ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে এবং সদর উপজেলার শেরপুরে দুটি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় ১৭৪ হেক্টর আউশ ধান আক্রান্ত হয়েছে এবং ৫৯ হেক্টর আউশের বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী জানান, পানি নামার পরই ধলাই নদের তিনটি ভাঙনস্থান মেরামত করা হবে। সোমবার বিকেলে মনু নদের পানি ৮৫ ও ধলাই নদের পানি বিপদসীমার ২৪ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৩ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত