জাহাঙ্গীর আলম খায়ের, বিশ্বনাথ

১৮ জুলাই, ২০১৯ ২১:১৫

বিশ্বনাথের তহশিলদারকে ইউএনওর আল্টিমেটাম!

দুই বছরেও হয়নি গৃহহীনদের তালিকা

সিলেটের বিশ্বনাথে দুই বছরেও গৃহহীনদের সঠিক তালিকা তৈরি করতে পারেনি উপজেলা প্রশাসন। আর সঠিক তালিকা তৈরি করতে না পারায় উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস শুকুরকে সাত দিনের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিকেলে খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদে গৃহহীনদের তালিকা যাচাই করতে গিয়ে এক বৈঠকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিতাভ পরাগ তালুকদার ওই ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে আল্টিমেটাম দেন।

২৫ জুলাই বৃহস্পতিবারের মধ্যে ওই ইউনিয়নের ‘ক, খ ও গ’ স্তরের গৃহহীনদের সঠিক তালিকা তৈরি করে দেওয়ার নির্দেশও দেন।

অন্যথায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বৈঠকে সকলের উপস্থিতিতে জানিয়ে দেন ইউএনও অমিতাভ পরাগ তালুকদার।

জানা গেছে, বিশ্বনাথের খাজাঞ্চী ইউনিয়নে ৮২টি গ্রামে ১৯ হাজার ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় আড়াই শতাধিক ছিন্নমূল মানুষ রয়েছেন। ওই ছিন্নমূল মানুষদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে খাজাঞ্চী ইউনিয়নের রাজাগঞ্জ বাজারের পাশে ছিন্নমূল মানুষের জন্য স্থানীয় পূষনী মৌজায় গুচ্ছগ্রাম নির্মাণে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২৫টি ঘর নির্মাণের জন্য উপজেলা কমিটি ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠনও করা হয়। ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস শুকুরকে ওই ইউনিয়নের গৃহহীনদের তালিকা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ দুই বছর পার হলেও গৃহহীনদের সঠিক তালিকা তৈরি করতে পারেননি সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস শুকুর।

খাজাঞ্চী ইউনিয়নে দুই থেকে আড়াই শতাধিক গৃহহীন মানুষের বসবাস জানিয়ে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তালুকদার মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও সমাজসেবক কবির আহমদ কুব্বার এ প্রতিবেদককে জানান, স্থানীয় তহশিলদারের গাফিলতি আর ইউপি সদস্যসহ সচেতন মহলের সঙ্গে সমন্বয়হীনতার কারণে এমনটা হয়েছে।

এ বিষয়ে সত্যতা জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিতাভ পরাগ তালুকদার বলেন, চার চারবার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে সঠিক তালিকা তৈরি করতে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। ‘ক খ গ’ ওই তিন ধাপে মাত্র ৮৬ জনকে তালিকাভুক্ত করে প্রতিবারই একই তালিকা দেখিয়ে যাচ্ছেন ওই কর্মকর্তা, যা পর্যাপ্ত নয়। ওই ইউনিয়নে আরও গৃহহীন মানুষ আছেন, যাদের তালিকাভুক্তি করা হয়নি। যে কারণে তিনি ওই কর্মকর্তাকে সাত দিনের সময় বেঁধে দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান তালুকদার গিয়াস উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন ইউএনও অমিতাভ পরাগ তালুকদার আর বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) ফাতেমাতুজ জোহরা, সমাজসেবক কবির আহমদ কুব্বার, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ওয়াহিদ আলী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুন নূর মেম্বার।

ইউপি সদস্য আমির আলীর পরিচালনায় ওই বৈঠকে মুক্তিযোদ্ধা আলকাছ মিয়াসহ ওই ইউনিয়নের সকল সদস্যসহ গৃহহীনরাও উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত