শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি

০৯ আগস্ট, ২০১৯ ২২:৫১

সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয়ের দাবি

শ্রীমঙ্গলে বিশ্ব আদিবাসী দিবস পালন

"আদিবাসী ভাষাচর্চা ও সংরক্ষণে এগিয়ে আসুন"-এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে র‍্যালি, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এর মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস।

শুক্রবার সকালে বৃহত্তর সিলেট আদিবাসী ফোরামের আয়োজনে শ্রীমঙ্গলে জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামের সামনে থেকে র‍্যালি বের করা হয়। র‍্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার অডিটোরিয়ামে এসে শেষ হয়।

র‍্যালি শেষে অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার ৩ আসনের সাংসদ ও মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেছার আহমদ। আদিবাসী যুব নেতা ভীমপল সিনহার সঞ্চালনায় বৃহত্তর সিলেট আদিবাসী ফোরামের কো চেয়ারপার্সন মুক্তিযোদ্ধা আনন্দ মোহন সিংহের সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রনধীর কুমার দেব, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মনসুরুল হক কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ এর নারী ভাইস চেয়ারম্যান বিলকিস বেগম। চা জনগোষ্ঠী আদিবাসী ফ্রন্টের সভাপতি পরিমল সিং বাড়াইক,ভূমিজ যুব নেতা কৃষাণ ভূমিজ,দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুনীল মৃধা,মনিপুরী সমাজকল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কমলা কান্ত সিংহ।

সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন বৃহত্তর সিলেট আদিবাসী ফোরামের মহাসচিব ফিলা পতমী।

পরে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আদিবাসীদের নিজস্ব সংস্কৃতি তুলে ধরতে নাচ গান ইত্যাদি পরিবেশন করে আদিবাসীদের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন৷

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ২৫তম দিবসে তাদের দাবী পার্বত্য চট্টগ্রামের মতো সমতলের ৩২ লাখ ক্ষুদ্র- নৃগোষ্ঠী বা আদিবাসীদের জন্য আরেকটি মন্ত্রণালয় স্থাপন করা।

তারা বলেন, সরকার পরিবর্তন এর সাথে আদিবাসীদের নাম পরিবর্তন করা হচ্ছে, এরশাদের আমলে নৃ-গোষ্ঠী, বিএনপির আমলে উপজাতি, আর বর্তমান সরকার আওয়ামী লীগ নাম দিয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। তবে তাদের দাবী আদিবাসী পরিচয় দেয়ার।

সরকার আমাদের আদিবাসীদের জন্য তাদের ভাষায় কয়েকটি বই বের করেছে, তবে আদিবাসী শিক্ষকের অভাবে বই গুলো পড়ানো হয় না।

বক্তারা বলেন, সারা বিশ্বে ৬৭০০ টি ভাষা আছে, এর মধ্যে ৫০০ ভাষা বিলুপ্তির পথে, বাংলাদেশ এর অনেক ভাষা আজ বিলুপ্তির পথে। দিন দিন ভাষা হারিয়ে যাচ্ছ। আমরা আধুনিকতার সাথে মিলে নিজেদের ভাষায় কথা বলি না, এটা ভাষা বিলুপ্তের প্রধান কারণ।

একটি ভাষার ৫০ হাজারের কম মানুষ হলে তা বিপন্ন ভাষা ধরা হয়, আদিবাসীর ভাষা এভাবে অনাদরে যেন বিপন্ন না হয় সে জন্য আদিবাসীদের ভাষা সংরক্ষণে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।
এছাড়াও সমতলের আদিবাসীদের ভূমি, শিক্ষাসহ অনেক সমস্যা রয়েছে। আদিবাসীদের জন্য বাজেটে বরাদ্দ বেশিরভাগ অর্থ পার্বত্য চট্টগ্রাম চলে যায়, সমতলের আদিবাসীরা সরকার থেকে তুলনামূলক কম সরকারি সহযোগিতা পান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত