শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি

০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:৩৮

সরকারি সড়কে চা বাগানের ফটক, চলাচলে বাধা

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে একটি সরকারি সড়কে ফটক বসিয়ে জনসাধারণের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ ওঠেছে জুলেখানগর চা বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

সরকারি সড়কে এভাবে ফটক বসিয়ে কাউকে চলাচলে বাধা দেওয়ার এখতিয়ার কারো নেই জানিয়ে সরকারি কর্মকর্তা বলছেন, শীঘ্রই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শ্রীমঙ্গল শহর থেকে সিন্দরখান ইউনিয়ন দিয়ে জুলেখানগর চা বাগান হয়ে খাসিয়াদের ধনছড়া পুঞ্জি পর্যন্ত গিয়েছে এই সড়ক। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন এই সড়কে নিজেদের বাগানের সম্মুখে লোহার ফটক বসিয়েছে জুলেখানগর চা বাগান। ফটকটি বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকে। ফটকে সাইনবোর্ড টানানো রয়েছে- 'বিনা অনুমতিতে যান চলাচল সম্পূর্ণ নিষেধ'।

ফটকের ভেতরে সবসময়ই একজন করে নিরাপত্তারক্ষী নিয়োজিত থাকেন। তিনি যানবাহনসহ মানুষজনকে চলাচলেও বাধা দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধনছড়া পুঞ্জির খাসিয়া বাসিন্দাদেরও এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতে বাধা দেওয়া হয় বলে তাদের অভিযোগ।

এলজিইডি'র শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী সঞ্জয় মোহন সরকার বলেন, এই সড়কটি এলজিইডির নিয়ন্ত্রণাধীন। কাচা এই সড়কটি পাকাকরণের পরিকল্পনা এলজিইডির রয়েছে।

তিনি বলেন, সরকারি সড়কে ফটক বসিয়ে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির এখতিয়ার কারো নেই।

সরেজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের উপরই বসানো হয়েছে লোহার ফটক। যার কপাট বন্ধ। ফটকের ভেতরে বসা রয়েছেন চা বাগানের একজন নিরাপত্তারক্ষী। ওই সড়ক দিয়ে যেতে চাইলে বাধা দেন নিরাপত্তারক্ষী।

ধনছড়া খাসি পুঞ্জির গ্রামপ্রধান (মান্ত্রী) প্রদীপ কংওয়াং বলেন, আমাদের সবসময় এই সড়ক দিয়ে চলাচলের সময় বাধা দেয়া হয়। পুঞ্জিতে গাড়ি প্রবেশ করতে চাইলে জুলেখা নগর চা বাগান কর্তৃপক্ষ বাধা দেয়। দিনের বেলা কয়েকটি সিএনজি গাড়ি অনুমতি নিয়ে ভিতরে যেতে পারলেও সন্ধ্যার পর থেকে কাউকেই ঢুকতে দেয়া হয় না। হঠাৎ করে পুঞ্জির কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে আমরা খুবই বেকায়দায় পড়ে যাই।

খাসি সোশ্যাল কাউন্সিল'র প্রচার সম্পাদক সাজু মারছিয়াং বলেন, জুলেখানগর চা বাগান কর্তৃপক্ষ ধনছড়া পুঞ্জিতে চলাচলের একমাত্র রাস্তাটিতে জনসাধারণ ও যানবাহনের প্রবেশে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে রেখেছে। চা বাগান কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে এখানে থাকা খাসিয়ারা নিজেদের বাড়িতে যেতে হয়। এ রাস্তায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিশেষ অনুদানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে দুটি কালভার্ট নির্মাণ করে দেওয়া হয় কিন্তু এ কালভার্টের সুবিধা ভোগ করতে পারছে না স্থানীয় খাসি সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা।

এ বিষয়ে কথা বলতে জুলেখা নগর চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দা গুলশান আরা বেগম'র মোবাইলফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেন নি।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, সরকারি রাস্তায় বাধা সৃষ্টি করার অধিকার কারোর নেই। এরকম কিছু ঘটে থাকলে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত