শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি

১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১৪:২০

শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ১৩ অক্টোবর

দীর্ঘ চৌদ্দ বছর পর গত ৮ সেপ্টেম্বর হতে যাচ্ছিল শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। কিন্তু সংসদ অধিবেশন থাকায় নির্ধারিত তারিখে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়নি। সম্মেলনের তারিখ এবার একমাস পিছিয়ে ১৩ অক্টোবর নির্ধারণ করা হয়েছে।

জানা যায়, সংসদ অধিবেশনে স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদ এবং মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেছার আহমেদের যোগদানের কারণে শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনটি পিছিয়ে যায়। সেই পিছিয়ে যাওয়া সম্মেলনটি আগামী অক্টোবর মাসের ১৩ তারিখে আয়োজন করার চেষ্টা চলছে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়।

সম্মেলন অতি দ্রুত আয়োজন করার নির্দেশনা দলটির হাইকমান্ড থেকেও রয়েছে বলে জানা যায়।

এদিকে সম্মেলন উপলক্ষে নতুন করে প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে দলটির মধ্যে।

মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিছবাউর রহমান ১৩ অক্টোবর সম্মেলন হওয়ার বিষয়টি সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন।

শ্রীমঙ্গলে বরাবরই রাজনৈতিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে ছিলো আওয়ামী লীগ। ১৯৯১ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ছয়টি জাতীয় নির্বাচনের সবকটিতেই (২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়) জয়লাভ করেছিলো দলটি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, দীর্ঘদিন শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন না হওয়ার পেছনে একটি বিশেষ সিন্ডিকেটের হাত ছিলো। কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর সেই সিন্ডিকেটের বলয় আস্তে আস্তে কমতে শুরু করে। তাই এবারের সম্মেলনে ইতিবাচক পরিবর্তনের আশা করছেন তারা।

নেতারা বলছেন, সম্মেলনকে সামনে রেখে তৃণমূলে বেশ সাড়াও পড়েছিলো। আওয়াজ উঠেছিলো কাউন্সিলরদের ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচনের। তৃণমূলের মতামত এবং সমর্থনের ভিত্তিতেই কমিটি গঠন করতে জেলার নেতৃবৃন্দের কাছে আবেদন জানান তারা। এই অবস্থায় সবকটি উপজেলাতেই নতুন নেতৃত্বের অধিষ্ঠান স্পষ্ট হয়ে উঠেছিলো। কিন্তু নির্ধারিত তারিখে সম্মেলন স্থগিত করায় স্তিমিত হয়ে পরে সবকিছু।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মনসুরুল হক সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তৃণমূলের প্রত্যাশা সম্মেলনে প্রতিফলিত হবে বলে আমরা আশা রাখি, সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে এটাই আমাদের চাওয়া।

নির্ধারিত তারিখে সম্মেলন না হওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান থাকায় সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হতে দেরি হয়েছে। আর দীর্ঘদিন মেয়াদোর্ত্তীন জেলা কমিটি থাকায় সম্মেলন করতে পারি নি।

দীর্ঘ ১৪ বছর পর সম্মেলনের ব্যাপারে জানতে চাইলে শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আছকির মিয়া জানান, সারাদেশেই এরকম মেয়াদোর্ত্তীন কমিটি রয়েছে। কিশোরগঞ্জে ২০ বছর পর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর সরকারদলে থাকলে দলের সম্মেলন করাটা একটু স্তিমিত হয়ে পরে। দলের সাবেক দুই সভাপতি উদ্যোগ নিয়েও সম্মেলন করতে পারেননি। তাছাড়া একটা সম্মেলন করতে অনেক টাকার প্রয়োজন সেই টাকার জোগানও একটা সমস্যা।

তবে সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি তাদের রয়েছে বলেও জানান তিনি। ভোটার তালিকা সহ সবকিছুই আমরা প্রস্তুত করে রেখেছি।

১৪ বছরে দলের সম্মেলন না হওয়ায় ঝিমিয়ে পরেছে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কাজও।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বেলায়েত হোসেন বলেন, সময়মতো উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন না হওয়ায় নতুন নেতৃত্বের শূন্যতা তৈরি হয়েছে। আমরা যারা রাজনীতি করি তাদের স্বপ্ন মূল দলে জায়গা পাওয়া। কিন্তু সম্মেলন না হওয়ায় আমরা মূল দলে ঢুকতে পারছি না।

গত ১৪ বছরে দলের কাজের মূল্যায়ন সম্পর্কে জানতে চাইলে শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এম এ মান্নান বলেন, ২০০৬ সালে শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আমাদের মেয়াদকালে আমরা নয়টি ইউনিয়নে কমিটি করে দিয়েছি শুধু পৌরসভায় কমিটি করতে পারিনি। আমরা আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করার চেষ্টা করেছি।

সম্মেলনের প্রক্রিয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুরো দেশে যে প্রক্রিয়ায় সম্মেলন হয়েছে সেভাবেই হবে। কাউন্সিলর ও নেতৃবৃন্দরা চাইলে ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত