নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১২:৪৩

ক্বিন ব্রিজকে যথাযথভাবে সংরক্ষণের দাবিতে বিকেলে নাগরিকবন্ধন

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও সুরমা রিভার ওয়াটারকিপারের যৌথ উদ্যোগে 'অবিলম্বে ক্বিন ব্রিজকে' ঐতিহ্যের মর্যাদায় যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও জালালাবাদ পার্কের উঁচু প্রাচীর ভেঙ্গে দৃশ্যমান নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে নাগরিকবন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকাল চারটায় ক্বিন ব্রিজের মধ্যবর্তী স্থানে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে।

বাপা সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক ও সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার আব্দুল করিম কিম জানান, ১৯৮৪ সালে শাহজালাল সেতু উদ্বোধনের পূর্ব পর্যন্ত দেশের অন্য প্রান্ত থেকে সিলেট নগরীতে প্রবেশের সমস্ত ধকল ক্বিন ব্রিজকে একাই সহ্য করতে হয়েছে। বিগত ৩৫ বছরে ক্বিন ব্রিজ ভিন্ন আরও চারটি ব্রিজ তৈরি হয়েছে। তবুও ক্বিন ব্রিজ মানেই সুরমা, ক্বিন ব্রিজ মানেই সিলেট শহর। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ক্বিন ব্রিজ এখন সংরক্ষণ ও সংস্কার করা প্রয়োজন।

আয়োজক দুই সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সিলেটে সুরমা নদীর ওপর প্রায় ৮৩ বছর পূর্বে উদ্বোধন করা 'ক্বিন ব্রিজ' একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই ব্রিজটিকে সিলেট শহরের 'প্রবেশদ্বার' বলা হয়। ১ সেপ্টেম্বর থেকে ক্বিন ব্রিজ দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সিলেট সিটি করপোরেশন থেকে জানানো হয়েছে ব্রিজের সংস্কার কাজ শুরু করা হবে। সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী আপাতত ব্রিজটি পরীক্ষামূলকভাবে পদচারী সেতু হিসাবে ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছেন, যা প্রশংসাযোগ্য। তবে ব্রিজের দুই প্রান্তে যানবাহন পারাপার বাধাগ্রস্ত করতে যে বেষ্টনী স্থাপন করেছেন তা দৃষ্টিকটু। ব্রিজের মূল সৌন্দর্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ব্রিজটি সংস্কার করা প্রয়োজন। এই ব্রিজকে সিলেটের ঐতিহ্য ঘোষণা করে ক্বিন ব্রিজের পূর্ব প্রান্তে থাকা আলী আমজাদের ঘড়ি, চাদনীঘাটের সিঁড়ি, সুরমা তীরের দৃষ্টিনন্দন উন্মুক্ত চত্বর, সিলেট সার্কিট হাউস, সারদা হল, জালালাবাদ পার্ক এই সবকিছুই পরিকল্পিতভাবে পর্যটক আকর্ষণের কেন্দ্র করা উচিৎ।

আয়োজকরা বলেন, সিলেটের সাংসদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সিলেট নগরীর সৌন্দর্যবর্ধনে আগ্রহী। তাই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহযোগিতা নিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশন বয়সের ভারে ক্লান্ত ঐতিহ্যবাহী ক্বিন ব্রিজকে ঐতিহ্যের মর্যাদায় যথাযথভাবে সংস্কার করবে এই প্রত্যাশা করছি।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ক্বিন ব্রিজের পূর্ব প্রান্তে সিলেট নগরে প্রবেশ করার পরেই সিলেট সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন একটি পার্ক রয়েছে। পার্কটি 'জালালাবাদ পার্ক' নামে পরিচিত। অল্প আয়তনের এই পার্কে রয়েছে বিভিন্ন প্রকারের ফুলের গাছ। ভ্রমণকারীদের জন্য আছে বসার বেঞ্চ ও শৌচাগার। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই পার্কটি দর্শনার্থী শূন্য থাকে। পার্কের নিরাপত্তা বেষ্টনী এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে বাহির থেকে মনে হয় কারাগারের প্রাচীর। ভেতরের সৌন্দর্য উপলব্ধি করা কঠিন। অপরিকল্পিত উঁচু বেষ্টনীর কারণে ভেতরে অসামাজিক কার্যকলাপ হওয়ার অভিযোগ আছে নানা মহলে। এ অবস্থায় পার্ক ও খেলার মাঠের অভাবের সিলেট শহরে সবেধন নীলমণি জালালাবাদ পার্কের উঁচু প্রাচীর ভেঙ্গে দৃশ্যমান নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।

কর্মসূচিতে সর্বস্তরের নাগরিকদের অংশগ্রহণ কামনা করা হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত