সিলেটটুডে ডেস্ক

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ২২:১০

দলিল জাল করে প্রবাসীর জায়গা দখল ভাড়াটিয়ার!

সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী নারীর অভিযোগ

সিলেট নগরীর যতরপুরে ভাড়াটিয়া থাকাবস্থায় জাল দলিল করে প্রবাসী এক নারীর জায়গা দখল করে আছেন সেরকারি একটি টিভি চ্যানেলের গাড়ি চালক। তাকে মদদ দিচ্ছেন ওই চ্যানেলের প্রতিনিধি। ফলে অভিযোগ করেও আইনী সহায়তা পাচ্ছেন না তিনি।

মঙ্গলবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন যতরপুর নবপুস্প-৭৪ নম্বর বাসার মৃত নুর মিয়ার স্ত্রী যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ছালেহা খাতুন। তিনি লিখিত বক্তব্যে জালিয়াত গাড়ি চালক শামীম আহমদ ও তার মদদদাতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন।

ছালেহা খাতুন তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, সিলেট মিউনিসিপ্যাল মৌজার যতরপুরে ১৯৮১ সালে তার প্রবাসী স্বামী নুর মিয়া স্থানীয় বাসিন্দা মকবুল হোসেনের কাছ থেকে ১০ শতক জায়গা ক্রয় করেন। ১৯৯৮ সালে তার স্বামী তাকে সাড়ে ৪ শতক জায়গা দলিল সম্পাদন করে দেন। বাকি সাড়ে ৫ শতক স্বামীর নামেই অবশিষ্ট থাকে। যার জেএল নং-৯১, খতিয়ান নং-১৩৩৮ ও ১৪৫০০, দাগ নং ১১২৭৮। শান্তিপূর্ণ ভোগদখল করা অবস্থায় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে বাসার দুটি কক্ষ ভাড়া নেন একটি টেলিভিশন চ্যানেল সিলেট অফিসের গাড়ি চালক মৃত ইছাক আলীর ছেলে শামীম আহমদ। ২০১৮ সালের জুলাই পর্যন্ত তিনি ভাড়াও দেন। এর পর ভাড়া না দিয়ে তিনি দাবি করেন বসবাসরত কক্ষ দুটি অর্থাৎ ০.৭৬ শতক জায়গা তিনি নাকি ক্রয় করেছেন।

ছালেহা জানান, প্রতারক ও জালিয়াত শামীম তার স্ত্রী সেলিনা বেগমের নামে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নুর মিয়াকে (ছালেহার স্বামী) দাতা দেখিয়ে ০.৭৬ শতক জায়গা দলিল সম্পাদন করেন। ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা মূল্যে কমিশনে ওই দলিল সম্পাদন দেখানো হয়। দলিল নং-৬৮৮৮/১৮।

স্বামী নুর মিয়া ২০০৮ সাল থেকে মানসিকরোগে ভোগছেন দাবি করে ছালেহা বলেন, সম্পুর্ণ যোগাযোগীমূলে শামীম দলিল সম্পাদন করেন। দলিলে আমাদের পক্ষের কোনো সাক্ষি নেই। এমনকি যে জায়গার দলিল সম্পাদন করেন শামীম সে অংশও আমার নামে। জায়গা বিক্রির ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা শামীম কার সামনে কিভাবে দিয়েছেন তারও প্রমাণ তিনি দেখাতে পারবেন না। এমনকি দলিলে গোলাপগঞ্জের লক্ষনাবন্দ গ্রামের ইজ্জাদ আলী নামের একজনকে সনাক্তকারী হিসেবে দেখানো জলেও তিনি দলিল সম্পর্কে কিছুই অবগত নয়।

এক প্রশ্নের জবাবে ছালেহা জানান, দখলদার শামীম সময় টিভির সিলেট অফিসের গাড়ির চালক। চ্যানেলের প্রতিনিধি ইকরামুল কবির অন্যায়ভাবে শামীমকে মদদ দিয়ে যাচ্ছেন। যার কারণে পুলিশ প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে। এমনকি দখল করা বাসার পানি ও গ্যাস লাইন বন্ধ করে দেওয়ার পরও সিটি করপোরশন পানির লাইনের সংযোগ দেয় ইকরামুল কবিরের তদবিরে। এর আগে আমি পানির লাইন সংযোগ না দিতে ১৯ আগষ্ট আবেদনও করি।

ছালেহা লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেন, নজিরবিহীন জালিয়াতির ঘটনায় ১৩ মে সিএমএম আদালতে মামলা, উচ্ছেদ পায়তারার অভিযোগে তিনি ২৫ এপ্রিল কোতোয়ালী থানায় জিডি, ৬ মে এসএমপি কমিশনার বরাবরে অভিযোগ করেন। তার স্বামী ১০ জুন হুমকী ও ভয়ভীতি এবং জায়গা বিক্রি করেননি উল্লেখ করে শামীমের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় আরেকটি জিডি করেন। এসব অভিযোগের পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। গত ৪ এপ্রিল শামীমের বাসা দখলের চেষ্টা ও তার পরিবারের উপর হামলার অভিযোগ এনে মামলা করা হয়েছে। মামলায় সদ্য সন্তান জন্মদানকারী তার মেয়েকেও আসামী করা হয়েছে। শামীমদের উৎপাত ও হয়রানীর কারণে তার স্বামী নুর মিয়া ২৯ জুন হার্টএটাক্ট করে মারা যান।

ছালেহা খাতুন গাড়ি চালক শামীম ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন এবং বাসা উদ্ধারে প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে ছালেহার মেয়ে জাফরিন সুলতানা, মেয়ের জামাই শিমুলসহ যতরপুরের মুরব্বিরা উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত