নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ অক্টোবর, ২০১৯ ২০:০৪

খালেদার কারাদণ্ড ও আবরার হত্যা একই সূত্রে গাঁথা: সিলেটে বুলু

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার খালেদার কারাদণ্ড ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড একই সূত্রে গাঁথা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী বরকত উল্লাহ বুলু। তিনি বলেছেন, “ষড়যন্ত্রমূলক মামলার ফরমায়েশি রায়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রাখা এবং দেশবিরোধী চুক্তির বিরোধিতা করে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা এক সূত্রে গাঁথা। কারণ দুইজনেরই অপরাধ দেশপ্রেম।”

শনিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে সিলেট মহানগর বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। একইসাথে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন বরকত উল্লাহ বুলু ।

বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, “ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার নিজেদের ক্ষমতা ঠিকিয়ে রাখতে দেশকে বিকিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বিধায় সরকার ভিন্নমতকে সহ্য করতে পারেনা। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। আর দেশের স্বার্থে কথা বলায় আবরার ফাহাদকে জীবন দিতে হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে এখনই রুখে দাড়াতে হবে। আওয়ামী সরকারের পতন ছাড়া মানুষের মুক্তির কোন পথ খোলা নেই। দেশপ্রেমের স্বার্থেই দেশপ্রেমিক গণতন্ত্রকামী জনতাকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারো দয়ায় মুক্তি পেতে চান না। কার্যকর আন্দোলনের মাধ্যমেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে। বুয়েটের ছাত্ররা দেখিয়ে দিয়েছে কিভাবে দাবী আদায় করতে হয়। দুর্বার আন্দোলনেই সরকারের পতন ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে।”

মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইনের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় নগরীর ঐতিহাসিক রেজিস্টারি মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

সাবেক এ মন্ত্রী আরও বলেন, “মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ঘোষণায় জাতি মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির ঘাড়ে বাকশালী শাসন চাপিয়ে দেয়া হয়। ৭৫ সাল পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সিপাহী জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে শহীদ জিয়া ক্ষমতায় আসেন। তিনি দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। মানুষের বাক স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও গণতন্ত্রের জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। ফ্যাসিস্ট সরকার তাদের অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে পথের কাটা ভেবে তিন বারের সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রীকে মাত্র দুই কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগে একটি ষড়যন্ত্রমুলক মিথ্যা বানোয়াট মামলায় ফরমায়েশি সাজা দিয়ে কারাগারে আটকে রেখেছে। অথচ এখন দেশে আওয়ামীলীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাসা-বাড়ী অফিসে শত শত কোটি টাকার খনির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “উন্নয়নের মিথ্যা বুলি আউরিয়ে তারা দেশকে মদ ও জুয়ার সাম্রাজ্যে পরিণত করছে। শেয়ার বাজার, ব্যাংক বীমা প্রতিষ্ঠানে চলছে দুর্নীতি আর লুটপাটের মহোৎসব। বিগত ১০ বছরে সাড়ে ৬ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। সুইস ব্যাংকে জমা হয়েছে দুই হাজার কোটি টাকা। এসব টাকা হচ্ছে জনগণের কাছ থেকে লুটপাট করা টাকা। এর হিসাব সরকারকে দিতেই হবে। সিলেটের জনপ্রিয় নেতা স্বৈরাচারী বিরোধী আন্দোলনের অগ্রসৈনিক জননেতা ইলিয়াস আলী, ছাত্রনেতা ইফতেখার আহমদ দিনার, জুনেদ ও গাড়ী চালক আনসার আলী সহ সারাদেশে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীকে গুম করে রাখা হয়েছে।”

সারাদেশে ৭৮ লক্ষ নেতাকর্মীদের উপর হাজার হাজার মামলা দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমার উপর ১৩০টি মামলা রয়েছে। পুলিশসহ দেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবহার করে ৩০ ডিসেম্বরের ভোট ২৯ ডিসেম্বরেই সমাপ্ত করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু আজ দেখা যাচ্ছে র‌্যাব বাহিনীকে প্রতিবেশী দেশ কিভাবে বেঁধে পিটিয়ে মেরে দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে সরকার এর শক্ত প্রতিবাদটুকুও করতে পারছেনা।”

মহানগর বিএনপির আপ্যায়ন সম্পাদক আফজাল উদ্দিনের পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সূচীত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে নাসিম হোসাইন বলেন, “বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা আওয়ামী লীগের হিংস্র রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ। আওয়ামী লীগ ভিন্নমতকে সহ্য করতে পারেনা। আদর্শিক মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ফরমায়েশি সাজা দিয়ে কারাগারে আটকে রেখেছে। জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে দেশনায়ক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ফরমায়েশি সাজা ও ষড়যন্ত্রমুলক মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। শহীদ আবরার ফাহাদ সহ সকল হত্যাকাণ্ডের জন্য আওয়ামী লীগ একদিন জনতার কাঠগড়া দাড়াতে হবে।”

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ ক্ষুদ্র ঋণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, সিলেট মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী, সহ সভাপতি এডভোকেট ফয়জুর রহমান জাহেদ, এডভোকেট হাবিবুর রহমান, হুমায়ুন কবির শাহীন, কাউন্সিলার ফরহাদ চৌধুরী শামীম, জিয়াউল গণি আরেফিন জিল্লুর, কাউন্সিলার রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, আব্দুস সাত্তার, অধ্যাপিকা সামিয়া বেগম চৌধুরী, বাবু নিহার রঞ্জন দে, ফাত্তাহ বকশী ও আমির হোসেন, উপদেষ্টা সরফরাজ আহমদ চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী, এডভোকেট আতিকুর রহমান সাবু, মাহবুব কাদির শাহী, আব্দুল আজিজ ও হুমায়ুন আহমদ মাসুক, সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, মুকুল আহমদ মোর্শেদ, মাহবুব চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ রেজাউল করিম আলো, প্রচার সম্পাদক শামীম মজুমদার, যুব বিষয়ক সম্পাদক মির্জা বেলায়েত আহমদ লিটন, স্বাস্থ্য সম্পাদক ডা. আশরাফ আলী, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক নুরুল আলম সিদ্দিকী খালেদ, স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক হাবিব আহমদ চৌধুরী শিলু, আইন সম্পাদক প্যানেল মেয়র এডভোকেট রুকশানা বেগম শাহনাজ, মানবাধিকার সম্পাদক মুফতি নেহাল উদ্দিন, পরিবার কল্যাণ সম্পাদক লল্লিক আহমদ চৌধুরী, বন পরিবেশ সম্পাদক আব্দুল জব্বার তুতু, শিশু সম্পাদক আব্দুল হাকিম, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক খসরুজ্জামান খসরু, সহ দপ্তর সম্পাদক লোকমান আহমদ, বিএনপি নেতা  মোতাহির আলী মাখন, মুফতি রায়হান উদ্দিন মুন্না, কয়েস আহমদ সাগর, উজ্জল রঞ্জন চন্দ, এম মখলিছ খান, মঈনুল হক স্বাধীন, জাবেদুল ইসলাম দিদার, আব্দুস সবুর, জিয়াউর রহমান দিপন, দিলোয়ার হোসেন রানা, রুমেল আহমদ, আব্দুর রহিম মল্লিক, সিরাজ খান, ডা. আব্দুল হক, মখলিছুর রহমান, নাসির উদ্দিন রব, আবুল কালাম, সুফিয়ান আহমদ, এনামুল হক চৌধুরী শামীম, আব্দুস সাত্তার আমীন, আমিনুর রশীদ খোকন, আলমগীর বখত চৌধুরী সুয়েব, নুরুল ইসলাম লিমন, আব্দুস সোবহান, মফিজুর রহমান জুবেদ, সালাহ উদ্দিন, সুহেল মাহমুদ, মন্তাজ হোসেন মুন্না, সালেহ আহমদ গেদা, ফয়েজ আহমদ শিপু, দিলোয়ার হোসেন চৌধুরী, রফিকুল ইসলাম, রায়হান আহমদ রুমেল, সাবেক ছাত্রনেতা সালেহ আহমদ খান, কাজী মেরাজ, দেওয়ান আরাফাত চৌধুরী জাকির, সায়াদ আহমদ মিন্টু, এমদাদুল হক স্বপন, সায়াদ আহমদ মিন্টু, লিটন আহমদ, জামাল আহমদ খান, সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সুদীপ জ্যোতি এষ ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী আহসান প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত