নিজস্ব প্রতিবেদক ও দিরাই প্রতিনিধি

১৪ অক্টোবর, ২০১৯ ১৮:১২

দিরাইয়ের শিশু হত্যার নেপথ্যে ‘পারিবারিক বিরোধ’

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে শিশু তুহিন আহমদ (৫) কে বীভৎস কায়দায় হত্যার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত শিশুর বাবা-চাচাসহ ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে তাদের আটক করা হয়।

পারিবারিক বিরোধের জেরেই শিশু তুহিনকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা পুলিশের।

দুপুরে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, পরিবারের সদস্যদের কথাবার্তায় কিছুটা অমিল পাওয়া গেছে। তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুহিনের বাবা, চাচা, চাচি, চাচাতো বোনসহ পরিবারের ৬ সদস্যকে আটক করা হয়েছে।

আটককৃতরা হলেন- বাবা আব্দুল বাছির, চাচা আব্দুল মুছাব্বির, ইয়াছির উদ্দিন, প্রতিবেশী আজিজুল ইসলাম, চাচি খাইরুল নেছা ও চাচাতো বোন তানিয়া।

পারিবারিক কলহের কারণেই এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) কে এম নজরুল ইসলামেরও।

এরআগে সোমবার সকালে নিজ বাড়ির পাশের একটি গাছের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় শিশু তুহিনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় মরদেহের পেটে দুটি ছুরি গাঁথা ছিলো এবং কান ও লিঙ্গ কাটা। নিহত তুহিন আহমদ উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের কেজাউরা গ্রামের আব্দুল বাছিরের ছেলে। পুলিশের ধারণা, রোববার রাতে শিশুটিকে হত্যার পর গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়ে থাকতে পারে।

নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, রোববার রাতের খাবার খেয়ে পরিবারের সবার সঙ্গে ঘুমিয়ে তুহিন। রাত ৩টার দিকে তুহিনের বোনের ঘুম ভেঙ্গে গেলে তিনি ঘরের দরজা খোলা দেখতে পান। এরপর পরিবারের সদস্যরা ঘুম থেকে উঠে দেখেন তুহিন ঘরে নেই। পরে খোঁজাখুঁজি করে বাড়ির পাশের মসজিদের পাশে একটি গাছের ডালে ঝুলন্ত অবস্থায় তুহিনের লাশ দেখতে পান।

এদিকে, শিশু তুহিনের পেটে বিদ্ধ দুটি ছুরিতে ওই গ্রামের বাসিন্দা ছালাতুল ও সুলেমানের নাম লেখা ছিলো বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের ফাঁসাতে এ ধরনের নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটনা হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয়দের।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কেজাউরা গ্রামের সাবেক মেম্বার আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে নিহত তুহিনের বাবা আব্দুল বাছিরের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছে। ছালাতুল ও সুলেমান সাবেক মেম্বার আনোয়ার হোসেনের লোক।

দিরাই থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি দেখছি। হত্যাকাণ্ডের পেছনের কারণ ও কারা জড়িত তা খোঁজে বের করার চেষ্টা করছি।

এ ব্যাপারে রাজানগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৌম চৌধুরী বলেন, এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড দিরাই উপজেলার মানুষ এর আগে দেখেনি। আমরা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই, ঘটনাটি তদন্ত করে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হোক।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত