গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি

১৭ অক্টোবর, ২০১৯ ২৩:৩২

স্বামীর সম্পত্তি থেকে ‘বঞ্চিত’, ‘অধিকার’ ফিরে পেতে চান নুরেছা

গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিণে স্বামীর সম্পত্তি থেকে নিজে ও সন্তানদের বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঢাকা দক্ষিণ বাজারের ব্যবসায়ী মৃত মো. সফিক উদ্দিনের স্ত্রী নুরেছা বেগম। তিনি সফিক উদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রী।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুর ২টায় ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ সম্মেলন কক্ষে ঢাকাদক্ষিণ দক্ষিণ নগর গ্রামের সফিক উদ্দিনের এই স্ত্রীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার মেয়ে ফাহিমা বেগম।

লিখিত বক্তব্যে নুরেছা বেগম অভিযোগ করেন, “তার স্বামী মরহুম মো. সফিক উদ্দিন ঢাকাদক্ষিণ বাজারের একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি চলতি বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর মারা যান। সফিক উদ্দিন মারা যাওয়ার পর তার প্রথম স্ত্রী সুফিয়া বেগম ও তার সন্তানেরা স্বামীর সম্পত্তি থেকে তার সন্তানদের বঞ্চিত করতে বিভিন্ন ভাবে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে পূবালী ব্যাংক লিমিটেডের ঢাকাদক্ষিণ শাখার ম্যানেজারের সহযোগিতায় তার স্বামী সফিক উদ্দিন নামীয় চারটি এফডিআর (এফ.ডি.আর নং- ৩৩৬৯, ৩৩৯০, ৩৩৮১ ও Snd ১২) হতে মোট ১ কোটি ১৩ লক্ষ ৯৪ হাজার ৪ শত ৫৩ টাকা তার প্রথম স্ত্রীর সন্তান রুমন আহমদ উত্তোলন করে নিয়েছে।”

লিখিত বক্তব্যে আরও বল হয়, “এই টাকা উত্তোলনের সময় ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম আব্দুর রহিম, ঢাকাদক্ষিণ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি বদরুল ইসলাম জামাল, ঢাকাদক্ষিণ ইউপির ৫নং ওয়ার্ড সদস্য সেলিম আহমদ ও ঢাকাদক্ষিণ বাজার বণিক সমিতির ২নং ওয়ার্ড সদস্য সুহেল আহমদসহ আরও কয়েকজন পূবালী ব্যাংক লিমিটেডের ঢাকাদক্ষিণ শাখার ম্যানেজারের সাথে সাক্ষাত করেন। তারা ম্যানেজারকে সফিক উদ্দিনের উত্তরাধিকারী শুধুমাত্র প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের মধ্যে প্রাপ্য টাকা বণ্টন না করে মরহুম সফিক উদ্দিনরে দুই স্ত্রী ও ১১ সন্তানের মধ্যে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক টাকা বণ্টন করে দিতে অনুরোধ করেন।”

“এর আগে দ্বিতীয় পক্ষের ছেলে মিহাদ আহমদ গত ২৬ সেপ্টেম্বর পূবালী ব্যাংক লিমিটেডের ঢাকাদক্ষিণ শাখার ম্যানেজার বরাবর তার মৃত পিতার এফডিআরের টাকা লেনদেন না করতে দরখাস্ত দেন। তবে ব্যাংক ম্যানেজার তাদের কথা ও লিখিত দরখাস্তে কর্ণপাত না করে গত ১৪ অক্টোবর প্রথম স্ত্রীর পুত্র রুমন আহমদের কাছে বুঝিয়ে দেন।” কেবল নমিনীর (রুমন আহমদ) কাছে এ টাকা না দিয়ে দুই স্ত্রী ও সন্তানদের প্রাপ্যতা অনুসারে বুঝিয়ে দিতে ব্যাংক ম্যানেজার তাদের কাছে দশ লক্ষ টাকা দাবি করেছেন বলেও নুরেছা বেগম লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন।

এছাড়াও ঢাকাদক্ষিণ বাজারে থাকা নুরেছা বেগমের স্বামীর মালিকানাধীন সফিক ট্রেডার্স নামে দুইটি চাউলের দোকান ও তিনটি গুদামে আনুমানিক ৭০-৮০ লক্ষ টাকার মালামাল ছিল। সফিক উদ্দিনের মৃত্যুর পর তার প্রথম স্ত্রীর ছেলে রুমন আহমদ তা দখল করে রেখেছেন ও মৃত্যুর পর থেকে দোকানের কোন ধরনের আয় তাদের দেয়া হচ্ছে না বলে জানান। এসব বিষয়ে তারা এলাকার মুরব্বিদের জানালে তারাও সমাধান করতে ব্যর্থ হন। এরপর ঢাকাদক্ষিণ বাজার বণিক সমিতি বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দিলে ঐ দিন রাতে প্রথম স্ত্রীর ছেলে রুমন আহমদ গুদামে সংরক্ষিত প্রায় ২ হাজার ২ শত বস্তা চাউল অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন বলে লিখিত বক্তব্যে দাবি করেন। তারা সফিক উদ্দিনের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি তার প্রথম স্ত্রী ও তার সন্তানেরা জোর করে দখল করে রেখেছে।

নুরেছা বেগম জানান, “তার সন্তানদেরকে পিতার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে প্রথম স্ত্রী বিভিন্ন ভাবে চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছেন।” এতে তিনি স্বামীর সম্পত্তির ন্যায্য হক পেতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সফিক উদ্দিনের মেয়ে ফাতিমা বেগম, ফারজানা জান্নাত জিতু, ছেলে মিহাদ আহমদ, আলাবি আহমদ ছাইম, ঢাকাদক্ষিণ ইউপি'র চেয়ারম্যান এস এম আব্দুর রহিম, ঢাকাদক্ষিণ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি বদরুল ইসলাম জামাল, সেক্রেটারি ও ইউপি সদস্য সেলিম আহমদ, ইউপি সদস্য সেলিম আহমদ ,ঢাকাদক্ষিণ বাজার বণিক সমিতির সাবেক সেক্রেটারি আব্দুল মন্নান, ব্যবসায়ী আবুল হাসনাত হাছনু মিয়া প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত