ছাতক প্রতিনিধি

১৮ অক্টোবর, ২০১৯ ০১:৫৭

ছাতকে ব্রিজ নির্মাণে অনিয়ম, এলাকাবাসীর চাপে কাজ বন্ধ

সুনামগঞ্জের ছাতকে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে একটি গ্রামীণ সড়কের কাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় এলাকার লোকজন কাজটি বন্ধ করে দিয়েছে।

সড়কের কাজে নিম্নমানের বালু-পাথর ও কাজের গুণগত মান সঠিক না হওয়ায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে গত বুধবার সচেতন এলাকাবাসীর পক্ষে ইউপি সদস্য কামাল হোসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম কবির সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কাজে দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রত্যক্ষ করেন। এসময় তিনি নির্মিত ব্লক ও প্রকল্প সাইডে রাখা নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ওই প্রকল্পের কাজে ব্যবহার না করার নির্দেশ দেন।

জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের হিলমেট প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের মাদ্রাসা বাজার হতে জামুরা গ্রাম এবং ইসলামপুর পর্যন্ত দু’টি রাস্তা ও একটি ছোট ব্রিজ নির্মাণে ১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। গ্রামীণ এ প্রকল্পের কাজটি সম্পন্ন করার দায়িত্ব পায় ঢাকার এরশাদ বিল্ডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ব্রিজের কাজ শেষ করে রাস্তায় ব্যবহারের জন্য ব্লক তৈরির কাজ চলছে।

রাস্তার স্বাভাবিক উচ্চতা থেকে অপেক্ষাকৃত উচ্চতায় ব্রিজ নির্মাণের কথা থাকলেও এ ব্রিজটির ক্ষেত্রে নির্মাণ কাজ করা হয়েছে ঠিক উল্টোভাবে। রাস্তার স্বাভাবিক উচ্চতা থেকে ব্রিজের উচ্চতা অপেক্ষাকৃত নিচু। ফলে বর্ষায় রাস্তায় পানি ওঠার আগেই ওই ব্রিজটি পানিতে তলিয়ে যায়। এ ব্রিজ নির্মাণের পর থেকে এলাকার মানুষ বর্ষায় দু’দিক থেকে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হচ্ছে। পায়ে ও নায়ে উভয় ক্ষেত্রেই সৃষ্টি হয়েছে চলাচলের প্রতিবন্ধকতা।

এদিকে, রাস্তা পাকাকরণের জন্য নিম্নমানের সিমেন্ট ও মাটি এবং টিলার মরা পাথর মিশ্রিত লাল পাথর প্রকল্প সাইডে এনে ডাম্পিং করে রাখা হয়েছে। দু’টি অংশে ১ হাজার ২০০ মিটার এবং ৮০০ মিটার রাস্তা পাকাকরণ ও ব্লক নির্মাণের জন্য এসব নির্মাণ সামগ্রী প্রকল্প সাইডে আনা হয়। দু’টি রাস্তায় ১৪ হাজার ব্লক ব্যবহারের কথা প্রকল্প কার্যাদেশে রয়েছে। ইতিমধ্যে ব্লক নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। কয়েক হাজার ব্লক এরই মধ্যে নির্মাণ করা হয়ে গেছে। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মিত ব্লক রাস্তায় ব্যবহার করার আগেই ভেঙে গুড়ো হয়ে যাচ্ছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ মাটি ও মরা পাথর মিশ্রিত টিলার পাথরের সাথে নিম্নমানের সিমেন্ট দিয়ে ব্লক তৈরি করায় তা ব্যবহারের আগেই ভেঙে যাচ্ছে। প্রতি ১ ভাগ সিমেন্টের সাথে ব্যবহার করা হচ্ছে ৮-১০ ভাগ বালু-পাথর। যে কারণে নির্মিত এসব ব্লক ভেঙে যাচ্ছে।

প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার সান্টু রহমান দুলাল এ ব্যাপারে জানান, তিনি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। প্রকল্প সাইডে এসে বিষয়টি এলাকার লোকজনের সাথে বসে সমস্যার সমাধান করবেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত