নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ অক্টোবর, ২০১৯ ০১:৩৭

টিকল না আপত্তি, কমিটিতে আরিফকেই রাখলেন মুহিত

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সিলেট ভ্রমণের একশ' বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘সিলেটে রবীন্দ্রনাথ শতবর্ষ স্মরণোৎসব’ কমিটিতে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের আপত্তি সত্ত্বেও সিলেট সিলেট কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে সদস্য সচিব হিসেবে বহাল রাখা হয়েছে।

সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় কমিটি ঘোষণা করেন উদযাপন পর্ষদের আহবায়ক আবুল মাল আবদুল মুহিত।

গত ১০ অক্টোবর রাতে ‘সিলেটে রবীন্দ্রনাথ শতবর্ষ স্মরণোৎসব’নিয়ে মতবিনিময়ের জন্যে ১৪ দলের নেতাদের ডেকেছিলেন আবুল মাল মুহিত। নেতারা কমিটি নিয়ে নিয়ে তাদের আপত্তির কথা জানান সাবেক এই অর্থমন্ত্রীকে। ‘কমিটি সর্বজনীন হয়নি’ বলে অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতাদের। বিশেষত কমিটির সদস্য সচিব বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরীর ব্যাপারে জোরালো আপত্তি তুলেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তাকে এই পদ থেকে সরানোর দাবিও ওঠে।

ওই সময় সদস্য সচিব হিসেবে আরিফুল হক চৌধুরীর অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করে বদরউদ্দিন আহমদ কামরান বলেছিলেন, ‘রবীন্দ্রনাথকে যারা ধারণ করেন, চর্চা করেন, যারা রবীন্দ্রনাথকে বাঙালির কবি মনে করেন তাদের নিয়েই এই কমিটি গঠন করা উচিত’। কমিটির সদস্য সচিবের ব্যাপারে আপত্তি তুলে তিনি আবুল মাল আবদুল মুহিতকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনি একজন প্রাজ্ঞ লোক। আপনি যে কমিটির আহ্বায়ক সেই কমিটিতে আপনার সঙ্গে মানানসই এমন কাউকে সদস্য সচিব করা উচিত’।

কামরানকে সমর্থন করে একই ব্যাপারে আপত্তি জানান শফিকুর রহমান চৌধুরী, সুজাত আলী রফিক, বিজিত চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ নেতারা।

সভায় উপস্থিত কমিটির সদস্য সচিব আরিফুল হক চৌধুরী বক্তব্য দিতে এসে নতুন সদস্য সচিব হিসেবে সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের নাম প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, ‘কামরান ভাই সদস্য সচিব হলে আমি সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো’। তবে এমন প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়ে কামরান বলেছিলেন, ‘এ বিষয়ে আপনি আমি দু'জনই সমান। রবীন্দ্রনাথের এতোবড় আয়োজনের সদস্য সচিব হওয়ার মতো যোগ্য লোক আমরা নই। যোগ্য কাউকেই এ পদে বসানো উচিত’।

কমিটির সদস্য সচিব পদ নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য ও বিতর্কের সমাপ্তি টেনে আবুল মাল আবদুল মুহিত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যে কয়েকদিনের সময় চান। অবশেষে সোমবার মতবিনিময় সভায় সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে সদস্য সচিব রেখেই কমিটি গঠন করেন মুহিত। তবে এই মতবিনিময় সভায় আরিফুল হক চৌধুরী ও বদরউদ্দিন আহমদ কামরান উপস্থিত ছিলেন না।

আবুল মাল আবদুল মুহিত এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে প্রোগ্রাম নির্দলীয়। এখানে দলের বিভাজন নেই। নগরপিতা হিসেবে রাখা হয়েছে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে’।

স্মরণোৎসব উদযাপনে অন্যান্যরা হলেন- যুগ্ম আহবায়ক বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, ব্যারিস্টার আরশ আলী, ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ, জ্যোতির্ময় সিংহ মজুমদার চন্দন, যুগ্ম সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম লিটন, মিসফাক আহমদ মিশু, কোষাধ্যক্ষ বিধায়ক রায় চৌধুরী, সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, আসাদ উদ্দিন আহমদ, আশফাক আহমদ, তাপস দাশ পুরকায়স্থ, জগলুল পাশা, এ কে শেরাম, আজিজ আহমদ সেলিম, রানা কুমার সিনহা, আল আজাদ, ইকরামুল কবির, প্রফেসর শামীমা চৌধুরী, মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম, নিরঞ্জন দে যাদু, পুলিন কুমার সিংহ, প্রিন্স সদরুজ্জামান, শামসুল আলম সেলিম, গৌতম চক্রবর্তী, প্রতীক এন্দ, রজত কান্তি গুপ্ত, বাপ্পা ঘোষ চৌধুরী, মকসুদ আহমদ, অনিমেষ বিজয় চৌধুরী ও মামুন হাসান।

এছাড়া সিলেটের বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের তিন শতাধিক সদস্যদের সমন্বয়ে উদযাপন পর্ষদ গঠন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সিলেটবাসীর আমন্ত্রণে ‘শ্রীভূমি’ সিলেটে এসেছিলেন ১৯১৯ সালের নভেম্বরে। ২০১৯ সালে এর শতবর্ষপূর্তি হচ্ছে। আগামী ৭ ও ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য এই আয়োজনের সমাপনী দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন বলেও জানিয়েছেন আয়োজকরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত