নিজস্ব প্রতিবেদক

২৩ অক্টোবর, ২০১৯ ১৩:১৫

সিলেট আসতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি : মার্কিন রাষ্ট্রদূত

আবার সিলেটে আসতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করছি, এমনই মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার।

বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকালে সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে তিনদিনের সফর শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি ।

রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের পরিবেশ রক্ষায় সফলতা অব্যাহত রাখা এবং প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট উভয় ধরনের দুর্যোগের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতাবৃদ্ধির পাশাপাশি সংরক্ষিত অঞ্চলগুলোর সুরক্ষায় বিশেষ পদক্ষেপের প্রশংসা করেন ।

বাংলাদেশের লক্ষণীয় প্রবৃদ্ধিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশ একত্রে কাজ করার অঙ্গীকার করেন তিনি।

তিন দিন সফরে সিলেটের বিভিন্ন পর্যটন এলাকা পরিদর্শন করার পাশাপাশি ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন মিলার।

রাষ্ট্রদূত বলেন, সিলেটে দেখার ও করার মতো অনেক কিছুই আছে। তবে আমার এবারের আসার অন্যতম কারণ ছিল বিবিয়ানা গ্যাস প্ল্যান্ট পরিদর্শন করা। শেভরনের মতো আমেরিকান কোম্পানিগুলো কেবল যে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তা নয়, এ দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে একটি বড় নিয়োগকারী হিসাবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

শেভরন স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করার জন্য কাজ করছে এমনটা জানিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে প্রতিষ্ঠানটি যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে এ সফরে তা দেখার সুযোগ পেয়েছি আমি। আমরা চাই যুক্তরাষ্ট্রের শেভরন এবং অন্য কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখুক এবং এ দেশের অর্থনীতিতে নতুন নতুন উদ্ভাবনী প্রযুক্তি চালু করুক। এতে আরও বেশি সংখ্যক লোকের সঙ্গে সমৃদ্ধি ভাগ করে নেওয়া যাবে এবং আমাদের উভয় দেশই উপকৃত হবে।

আর্ল মিলার বলেন, সিলেটে অবস্থানকালে আমার ‘রাতারগুল বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকা’ ঘুরে দেখারও সুযোগ হয়েছিল। আমি নৌকায় চড়ে এলাকাটি বেড়িয়েছি এবং জলাভূমির বনটির দারুণ উদ্ভিদ এবং প্রাণী বৈচিত্র্য দেখেছি। রাতারগুলের মতো বাস্তুসংস্থানগুলো সংরক্ষণ করা খুবই জরুরি, কারণ এগুলো বিভিন্ন সংরক্ষিত প্রজাতির আবাসস্থল এবং মানুষকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করার মতো পরিবেশগত সেবা দেয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের পরিবেশ রক্ষায় সফলতা অব্যাহত রাখা এবং প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট উভয় ধরনের দুর্যোগের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতাবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সংরক্ষিত অঞ্চলগুলোর সুরক্ষায় নেতৃত্বদানকারী যৌথ পরিচালনা কমিটিগুলোর ভূমিকা অপরিসীম। আমি এই অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য তাদের অভিনন্দন জানাই।

তিনি বলেন, আমরা সিলেট অঞ্চলে মানবপাচারবিরোধী কার্যক্রম এবং অবৈধ ট্রাভেল এজেন্সিগুলির বিরুদ্ধে গেল গ্রীষ্মে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছি। মানবপাচার মোকাবেলায় বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করা এবং পাচার থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষের বিভিন্ন সহায়তা পাওয়ার সুযোগ বাড়ানো যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার।

তিনি আরও বলেন, পাচারকারীরা যে মুনাফার লোভে অসহায় লোকদের শোষণ করা চালিয়ে যাচ্ছে তার সুযোগ বানচাল করে দিতে করণীয় বিষয়গুলো নিয়ে আমি ও বিভাগীয় কমিশনার আলোচনা করেছি। এর মধ্যে ছিল ফৌজদারি আদালতে পাচারকারীদের বিচারসহ বিভিন্ন বিষয়।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, সিলেট ত্যাগের সময় আমার বার্তাটি হচ্ছে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নতুন নতুন প্রযুক্তি, পরিবেশ এবং নিরাপত্তাগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। এমন একটি সময়ে কোম্পানিগুলোর জন্য উন্মুক্ত বিনিয়োগ এবং ন্যায্য প্রতিযোগিতার টেকসই পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং যেসব নীতি এবং মূল্যবোধ বাংলাদেশের লক্ষণীয় প্রবৃদ্ধিকে সম্ভব করেছে সেগুলোকে জোরদার করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশকে একত্রে কাজ করতে হবে। এটি ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের আওতায় বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশি জনগণের প্রতি আমাদের দূরকল্প ও অঙ্গীকার।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত