সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

০৫ নভেম্বর, ২০১৯ ১৪:২১

‘অভাবের তাড়নায়’ কিশোরীর আত্মহত্যা

সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জে 'অভাবের তাড়না সইতে না পেরে গাছের ডালে ফাঁস দিয়ে' সুরাইয়া বেগম (১৫) নামে এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছে।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকালে পুলিশ লাশ জেলা সদর মর্গে প্রেরণ করেছেন।

নিহত সুমাইয়া উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের কাদিপুর গ্রামের মামুন মিয়া ও শানু বেগম দম্পতির মেয়ে। তাদের পাঁচ ছেলে ও চার মেয়ের মধ্যে সুমাইয়া ছিলেন চতুর্থ সন্তান।

পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, উপজেলার কাদিপুর গ্রামের কিশোরী সুমাইয়া নিজ বসতবাড়ির আঙ্গিনায় থাকা আতা ফলের গাছের ডালে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় আত্মহত্যা করে। পরিবার ও প্রতিবেশীরা ওই দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে গাছের ঢালে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। পরে পুলিশ এসে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর রাতে লাশ থানা হেফাজতে নিয়ে যায়।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) নিহতের পিতা মামুন মিয়া গণমাধ্যমকে জানান, স্ত্রী সন্তানসহ ১১ জনের সংসারে প্রতিনিয়ত অভাব লেগেই লাগত। এমনকি পরিবারটি সুবিধাবঞ্চিত হওয়ায় প্রতিদিন নিয়মিত তিন বেলা আহারই জুটত না। আত্মহত্যার দুদিন আগে সুমাইয়া দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় সাদা ভাতে তরকারি না থাকায় মায়ের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। মা শানু বেগম মেয়েকে কিছুটা বকাঝকা করলে অভিমান জেঁকে বসে তাকে। এক পর্যায়ে অভাবের তাড়নায় ও অভিমানেই হয়তো মেয়ে আমার চিরতরে আমাদের অভাবের সংসার ছেড়ে যেতে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

মামুন মিয়া আরও জানান, আমি অসুস্থ, নিজের জমিজমা বা আয় রোজগার করার সামর্থ্য নেই। একমাত্র ছেলে রাজধানী ঢাকায় বেসরকারি একটি কোম্পানিতে হাজার পাঁচেক টাকা বেতনে চাকুরি করে।

''ছেলে নিজের থাকা খাওয়া খরচ বাঁচিয়ে মাসে হাজার দুয়েক টাকা বাড়িতে পাঠালেও তাতে পরিবারের সব সদস্যদের তিন বেলা ভরণপোষণ ঠিকমত চালিয়ে যেতে পারছিলাম না। কোনো কোনো দিন একবেলা/দুবেলা উপোষ থাকার পর চুলায় ভাত রান্না হলেও তা তরকারি ছাড়া শুধু লবণ মাখিয়েই আমাদের আহার করতে হতো।''

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার এসআই জহিরুল ইসলাম তালুকদার মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) জানান, পারিবারিক অভাব ও মায়ের সাথে তরকারি নিয়ে বাকবিতণ্ডা এবং বকাঝকার কারণে অভিমানের জের ধরেই ওই কিশোরী আত্মহনন করে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত