রায়হান উদ্দিন সুমন, বানিয়াচং

০৯ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:৪৩

বানিয়াচংয়ে বেড়েই চলছে শাক-সবজির দাম

বাজারে শাক-সবজি পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকার পরেও দাম প্রায় বেড়েছে হু-হু করে। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বিভিন্ন ধরণের সবজির দাম। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষেরা পড়ছেন বিপাকে। শুক্রবার (৮নভেম্বর) বানিয়াচং সদরের কয়েকটি বাজার ঘুরে শাক-সবজির দাম বাড়ার বিষয়টি চোখে পড়েছে।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে ১৫০টাকা কেজি কাঁচা মরিচ ১৯০ টাকা থেকে ২০০টাকায়, ৪৫টাকা কেজি বেগুন ৬০ থেকে ৬৫টাকা, ৭০টাকা কেজির টমেটো ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, ৫৫টাকা কেজির শিম ৭০থেকে ৭৫টাকা, ২০টাকা কেজি আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকা, ৪০টাকা কেজির পটল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, ৫০টাকা কেজির করলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ২০টাকা কেজির শসা ৩০ থেকে ৩৫টাকা, ৩৫টাকা কেজির বরবটি ৫০ থেকে ৫৫টাকায়, ৪০টাকা কেজির ফুলকপি ৭০ থেকে ৭৫টাকা, ৫০টাকা কেজির মুকি ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, ৩৫টাকা কেজির বাঁধাকপি ৬৫ থেকে ৭০টাকা, ২০টাকা কেজির লাল শাক ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, ৩০টাকা কেজির ঢুঁগি শাক ৩৫ থেকে ৪০টাকা, ১০টাকা পিচ লেবু বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৫টাকায়, বাংলা লাউ সাইজ ভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, ৫০টাকা কেজির গাজর ৬৫ থেকে ৭০টাকায়, ধনিয়া পাতা কেজি ১৯০ থেকে ২০০টাকায়, প্রতি হালি ডিম ৪৫ থেকে ৫০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য প্রতিটি সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা কেজি বেড়েছে।

তবে বিভিন্ন বাজার ও পণ্যের মানভেদে দাম প্রতি কেজিতে  ৫ থেকে ১০টাকা পার্থক্য লক্ষ্য করা গেছে। এদিকে পেঁয়াজের দাম এখনো সহনীয় পর্যায়ে আসেনি। প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০টাকা থেকে ১২০টাকা কেজিতে।

সবজি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এখনো পাইকারি বাজারে শীতের সবজি পর্যাপ্ত উঠছে না। অল্প পরিমানে সবজি উঠছে। এতে পাইকারি ক্রেতাদের চাহিদা মিটছে না।

ব্যবসায়ী আব্দুল আওয়াল জানান, এখনো রীতিমতো শীত পড়েনি। তবে চাহিদা অনুযায়ি সরবরাহ নেই। এ কারণে বাজারে সবজির দাম বেড়েছে। এদিকে গত এক সপ্তাহের ব্যবধাণে চাউলের দামে বেড়েছে কেজিপ্রতি ৮টাকা থেকে ১৫টাকা।

চাউল ব্যবসায়ী শরীফ উল্লাহ জানান, গত ঈদুর আযহার পর থেকেই মোটা চাউলের দাম বেড়েছে। তাই বেশি দামে কিনে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি আরো জানান, এ পর্যন্ত মোটা ও সরু চাউল পাওয়া যেত কেজি প্রতি ৩৫টাকায়, কিন্তু এখন ৪৫ থেকে ৪৮টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে চাউলের দাম কেনো বাড়ছে তা জানেন না বলে জানিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। অন্যদিকে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগীর দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ২৫টাকা। কয়েকদিন আগেও এক কেজি ব্রয়লার বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১১০টাকায়।

মুরগী ব্যবসায়ী বাবুল মিয়া জানান, মুরগীর খাবারের দাম বাড়ায় খামারিরা দাম বাড়িয়েছেন।

শিক্ষক আসাদুজ্জামান জানান, বাজারে পর্যাপ্ত সবজির সরবরাহ থাকার পরেও দাম বেশি রাখাটা মোটেই কাম্য নয়। সেই হিসেবে সব সবজির দাম কমার কথা। কিন্তু বাজারে এসে দেখি সবকিছুর দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ,কার্যকরী বাজার তদারকি ব্যবস্থা না থাকায় হঠাৎ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। এতে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী লাভবান হলেও বেকায়দায় পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।

বানিয়াচং ভোক্তা অধিকার পরিষদের সভাপতি সাহিবুর রহমান জানান, মধ্যস্বত্বভোগীদের মুনাফার প্রবণতা বেড়েছে। আর ভোক্তারা বেশি দাম মেনে নিতে অভ্যস্থ হচ্ছেন। এ বিষযে ভোক্তাদের প্রতিবাদ করা উচিত। সামান্য অজুহাত পেলেই ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দেন।

তিনি আরো বলেন, দেশে সবজি উৎপাদন কিছুটা কম হলেও এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যে দাম বাড়বে। এ ক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়াতে পদক্ষেপ নেয়া উচিত। খুচরা বাজারের একচেটিয়া মুনাফা করার সুযোগ থাকায় দামের ব্যবধান বেশি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ভোক্তা আইন বাস্তবায়ন করা দরকার আছে বলে আমি মনে করি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত