কুলাউড়া প্রতিনিধি

১১ নভেম্বর, ২০১৯ ২৩:০২

‘প্রধানমন্ত্রীর সম্মানার্থে’ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিলেন তোফায়েল

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানার্থে কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সদ্য সাবেক কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির সিনিয়র সদস্য আব্দুল মোক্তাদির তোফায়েল।

তিনি সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পৌর শহরের একটি রেস্টুরেন্টে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের সাথে মতবিনিময় ও চা চক্র অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনকে সফল করতে উপজেলা আওয়ামী লীগের নতা-কর্মীদেরকে নিয়ে দিনরাত কাজ করে গেছি। কারণ কুলাউড়া আওয়ামী লীগের ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস রয়েছে। সেটা যাতে ক্ষুণ্ণ না হয় এজন্য নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে সম্মেলন সম্পন্নের প্রয়াস চালিয়েছি। রোববার সেই কাঙ্ক্ষিত সম্মেলন এবং কাউন্সিল সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে আমরা সম্পন্ন করতে পেরেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবন শুরু করি। পরবর্তীতে কুলাউড়া ডিগ্রি কলেজের ভিপি নির্বাচিত হই। ১৯৮৭ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করার কারণে ওই সরকারের বিশেষ ক্ষমতা আইনে আমাকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। এজন্য সাড়ে ৯ মাস কারাবাস ও নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে আমাকে। আমার পিতা আব্দুর রহিম উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। তিনিও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করে গেছেন। আমি আমার পিতার ন্যায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে রাজনীতি করে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন,  ‘২০০৪ সালেও আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলাম তবুও আমাকে যুগ্ম সম্পাদক পদ দেয়া হয়েছে। তবুও আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে সরে যাইনি। এক এগারোর সময়ও নেত্রীর মুক্তির দাবিতে দলীয় সকল কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলাম। নিজেকে গুটিয়ে নেইনি। কারণ বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে উনার কর্মী হয়ে সারাজীবন কাজ করে যাচ্ছি, আজীবন কর্মী হয়ে পাশে থাকবো। পদ-পদবীর জন্য রাজনীতি করি না, করলে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ নেত্রীর কাছে পদের জন্য দৌড়ঝাঁপ করতাম। অনেকে বলেন আমি নাকি দল ছেড়ে প্রবাসে চলে গিয়েছিলাম। তাদের জ্ঞাতার্থে বলতে চাই ২০০৯ সালে সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করি। যুক্তরাষ্ট্র গেলেও আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে সরে যাইনি। সেখানেও নিউজার্সি আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি ২০১৪ সাল পর্যন্ত।’

তোফায়েল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু, দেশ, দল ও নেত্রীর প্রতি ভালোবাসার টানে আবারো নিজের স্ত্রী সন্তানকে প্রবাসে রেখে দেশে চলে এসেছি। কারণ আমি আজীবন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে যাবো আমার পিতার মতো। সেখান থেকে আমার বিচ্যুতি ঘটবে না।’

সদ্য সমাপ্ত কাউন্সিলে নিজের সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন ‘কাউন্সিল অধিবেশনে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন আমাকে ডেকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার একটি ক্ষুদে বার্তা দেখান। সেখানে লেখা সাবেক এমপি আব্দুল জব্বারের পুত্রকে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত করেছেন। তাৎক্ষণিক আমি নেত্রী এই ক্ষুদে বার্তা থেকে উনার প্রতি সম্মান রেখে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছি। শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়নে ও শুদ্ধি অভিযানকে সফল করতে আমি নেত্রীর নেতৃত্বে কাজ করে যাবো। দলে যে শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে সেটি তৃণমূল পর্যায়েও শুরু হবে এটাই আমার প্রত্যাশা।’

সর্বশেষ সদ্য সমাপ্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও কাউন্সিল সফল ভাবে সম্পন্ন হওয়া দলীয় নেতাকর্মীসহ কুলাউড়ায় কর্মরত সকল সাংবাদিকদের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে তিনি উপস্থিত সকল সংবাদকর্মীদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত