গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি

১৩ নভেম্বর, ২০১৯ ২১:৫০

গোলাপগঞ্জে আ’লীগের কাউন্সিল পণ্ড, পুলিশি প্রহরায় ফিরলেন কেন্দ্রীয় নেতারা

গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল শেষ পর্যন্ত হয়নি। তৃণমূল নেতাকর্মীরা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে পারেনি তাদের পছন্দের প্রার্থীদের। এতে ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা অবরুদ্ধ করে রাখে কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দদের।

শেষ পর্যন্ত টান টান উত্তেজনার মধ্যে পুলিশি প্রহরায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপজেলা প্রাঙ্গণ থেকে স্থান ত্যাগ করেন।

নতুন কমিটি গঠিত না হওয়ায় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা গোলাপগঞ্জ চৌমুহনীতে জড়ো হয়ে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানায়। বিষয়টি গোলাপগঞ্জের আওয়ামী পরিবার ছাড়াও সর্বমহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

দীর্ঘ ১৪ বছরপর গতকাল বুধবার গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সম্মেলন ও কাউন্সিলের দিন তারিখ নির্ধারণ হয়। এ কাউন্সিলে নতুন নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে এমন স্বপ্ন দেখে আওয়ামী লীগ পরিবারের নেতাকর্মীরা বেশ উৎফুল্ল ছিলেন। বিগত কিছুদিন ধরে আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপজেলা সদর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছিল।

বুধবার বেলা ১২টায় পৌরসভা প্রাঙ্গণে সম্মেলন শুরু হলে জাতীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে ত্যাগী নেতাদেরকে সভাপতি, সেক্রেটারি ও অন্যান্য পদে নির্বাচন করার জন্য সবার প্রতি আহবান জানান। প্রথম অধিবেশন সমাপ্ত হওয়ার পর দ্বিতীয় অধিবেশন সম্পন্নের জন্য উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন নির্ধারণ করা হয়। এরই আলোকে উপজেলার ১১ ইউনিয়ন ও পৌরসভার কাউন্সিলারগন কাঙ্ক্ষিত প্রার্থীকে সভাপতি ও সম্পাদক করার জন্য ভোটের প্রস্তুতি নেন। সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন উদ্যোগ নেন সমঝোতার ভিত্তিতে কমিটি গঠন করতে। এসময় উপজেলা সম্মেলন কক্ষে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থীদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। সেখানে কোন সমঝোতা হয়নি এসময় বাহিরে অবস্থানরত বিপুল সংখ্যক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জানতে পারেন ভোট ছাড়াই বিশেষ কজন লোক দিয়ে কমিটি গঠনের লক্ষ্যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

সংবাদটি প্রচারিত হতে থাকলে নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করে। এসময় অনেকেই স্থানীয় এমপি সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে উদ্দেশ্য করে নানা মন্তব্য করতে থাকেন। এক পর্যায়ে নুরুল ইসলাম নাহিদের বিরুদ্ধে চলতে থাকে নানা শ্লোগান। বিষয়টি অনুধাবন করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শক্ত অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে পুলিশের প্রহরায় নুরুল ইসলাম নাহিদসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দরা উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।

এদিকে উপজেলা প্রাঙ্গণ থেকে হাজারও ক্ষুব্ধ নেতাকর্মী পৌর শহরে মিছিল সহকারে এসে জড়ো হয়ে তারা মিছিল দিতে থাকে। একপর্যায়ে তারা সিলেট জকিগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানায়। এতে দুদিকে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে । পরে সভাপতি প্রার্থী লুৎফুর রহমান নেতাকর্মীদের অনুরোধ করে বলেন সড়ক অবরোধ করায় যাত্রী সাধারণ দুর্ভোগ হচ্ছে তাই দ্রুত অবরোধ তুলে নিতে। শেষ পর্যন্ত তার অনুরোধে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত