বড়লেখা প্রতিনিধি

১৮ নভেম্বর, ২০১৯ ২১:০২

বড়লেখায় লবণ নিয়ে গুজবে হুলস্থূল, অভিযানে প্রশাসন

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ৭ প্রতিষ্ঠানে জরিমানা

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় লবণের দাম বৃদ্ধির গুজব ছড়িয়ে মুনাফা লুটার চেষ্টা করছেন এক শ্রেণির ব্যবসায়ী। এ সংক্রান্ত সংবাদে সোমবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে বড়লেখায় ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযানে নামে। অতিরিক্ত দামে লবণসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি ও মূল্য তালিকা না টাঙানোর অপরাধে উপজেলার সাতটি দোকানের মালিককে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এদিকে লবণের দাম বাড়ার কথা শোনে সকাল থেকে অনেকেই তাড়াহুড়ো করে লবণ কেনার চেষ্টা করেছেন। তবে সোমবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন বাজারে লবণের কোনো সংকট নেই। পর্যাপ্ত লবণ মজুদ আছে। লবণের দাম বাড়ার বিষয়টি গুজব।

সোমবার বিকেল সাড়ে চারটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নের কাঠালতলি বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুস শুক্কুরকে ১০ হাজার টাকা, দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের রতুলি বাজারের কাউছার ভেরাইটিজ স্টোরকে ৫ হাজার, অজিত ভেরাইটিজ স্টোরকে ৫ হাজার ও শ্রী-দুর্গা ভেরাইটিজ স্টোরকে ৫ হাজার এবং সুজানগর ইউনিয়নের আজিমগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী শাহাব উদ্দিনকে ৫ হাজার, ইমন ভেরাইটিজ স্টোরকে ৫ হাজার এবং বিষাণ ভেরাইটিজ স্টোরকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালতে নেতৃত্ব দেন বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী হাকিম মো. শামীম আল ইমরান।

খোরশেদ আলম নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘সন্ধ্যায় হঠাৎ বাসা থেকে স্ত্রী ফোন করেছেন। বলেছেন মানুষ বলাবলি করছে লবণের দাম অনেক বেড়েছে। বেশি করে লবণ কিনতে।’

এরকম কথা জানালেন কামাল আহমদ নামে মুঠোফোনের এক ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, ‘লবণ নিয়ে সারাদিন হুলস্থূল কাণ্ড হয়েছে। গ্রামের দোকানগুলোতে ৭০ থেকে ৮০টাকায় বিক্রির খবর পেয়েছি।’ সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক মাছুমও জানালেন এমন কথা।

মোহাম্মদ আব্দুস সামাদ নামের এক এনজিও প্রতিনিধি জানিয়েছেন, লবণের দাম বাড়ার গুজবে অনেককে বেশি বেশি করে লবণ কিনতে দেখেছি। মানুষের সচেতনতা দরকার।

বড়লেখা হাজীগঞ্জ বাজারের মুদি (ভুষিমাল) ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. ছয়দুল ইসলাম বলেন, ‘বড়লেখায় লবণের কোনো সংকট নেই। সকাল থেকে একটি কুচক্রী মহল লবণের দাম বাড়ার কথা প্রচার করে। এ গুজবে সাধারণ মানুষ লবণ কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। আমরা মানুষকে বুঝানোর চেষ্টা করেছি। পৌর মেয়র ও প্রশাসনের সাথে আমরা যোগাযোগ করেছি। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) হাজীগঞ্জ বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় এ সংক্রান্তে মাইকিং করানো হবে। ক্রেতা সাধারণকে এইসব গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ করছি। হাজীগঞ্জ বাজারের বিভিন্ন দোকানীর সাথে কথা হয়েছে। কেউ অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করছে না।’

বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী হাকিম মো. শামীম আল ইমরান সোমবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘লবণসহ বিভিন্ন পণ্যে অতিরিক্ত দাম রাখা ও মূল্য তালিকা না থাকায় বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালানো হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত