হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

০৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১৬:১৮

লাখাইয়ে আ.লীগের সম্মেলন: মনোনয়ন ফি নিয়ে বাণিজ্যের অভিযোগ

হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে মনোনয়ন ফি নিয়ে বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে মনোনয়ন ফি আদায় করায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ত্যাগী নেতাদের সম্মেলনে অংশগ্রহণ না করানোর জন্যই কৌশলে এ পন্থা অবলম্বন করা হয়েছে। মনোনয়ন ফি আদায় নিয়ে পদ প্রত্যাশী কয়েকজন প্রার্থী স্বীকার করলেও প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।

তবে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির এক সদস্য মনোনয়ন ফি আদায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।

নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করলেও প্রভাবশালী এক নেতার ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে রাজি হচ্ছেন না।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ৬ ডিসেম্বর লাখাই উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। ২৭ নভেম্বর ছিল মনোনয়ন জমাদানের শেষ দিন। সম্মেলনে সভাপতি পদে একজন, সাধারণ সম্পাদক পদে পাঁচজন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে চারজন ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সাতজন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সভাপতি পদে ৫০ ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য ফি নেওয়া হয় ৪০ হাজার টাকা। আর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদের জন্য ২৫ হাজার ও ২০ হাজার টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশ রয়েছে সম্মেলনের নামে কোন প্রার্থীর নিকট থেকে ফি নেওয়া যাবে না। কিন্তু নির্দেশ অমান্য করে মনোনয়ন ফি নেয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

নামে প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রার্থী স্বীকার করেন যে, সভাপতি পদে ৫০ হাজার টাকা, সাধারণ সম্পাদক ৪০ হাজার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে যথাক্রমে ২৫ হাজার ও ২০ হাজার টাকা মনোনয়ন ফি নেওয়া হয়েছে। ফি আদায়ের রশিদ চাইলে নির্বাচন পরিচালনার কমিটির প্রধান তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

তারা আরও জানান, মনোনয়ন ফি নিয়ে নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটি প্রায় ৫ লক্ষ টাকা বাণিজ্য করছে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক আব্দুল মতিন মাস্টার বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন, প্রার্থীদের কাছ থেকে কোনও মনোনয়ন ফি নেওয়া হয়নি।

তবে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য এডভোকেট ঈসরাইল মিয়া মনোনয়ন ফি নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এই টাকা সম্মেলনের জন্য নেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কর্তৃক মনোনয়ন ফি আদায় নিয়ে কোনও বিধি-নিষেধ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই।

উল্লেখ্য, জেলা ও উপজেলা সম্মেলনে মনোনয়ন ফি না নিতে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নির্দেশ দিয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে হবিগঞ্জ জেলা সম্মেলনে প্রার্থীদের কাছ থেকে কোন মনোনয়ন ফি নেওয়া হচ্ছে না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত