নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ২২:৫২

অবশেষে স্বপ্নের শাহজালাল সার কারখানায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু

অবশেষে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে নির্মিত শাহজালাল সারকারখনায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে।

রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টা থেকে দেশের বৃহত্তম এই সার কারখানায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়। এর আগে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পরীক্ষামূলক উৎপাদন কয়েকদফা পিছিয়ে যায়।

শাহজালাল সার কারখানার প্রকল্প পরিচালক কামরুজ্জামান সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরকে বলেন, রবিববার সন্ধ্য সাড়ে ৭ টা থেকে এই কারখানায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে। এখন ৭০ শতাংশ উৎপাদন হয়েছে। নভেম্বরে পূর্ণদ্যােমে উৎপাদন শুরু হবে বলে জানান তিনি।

এরআগে শনিবার রাতে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করলেও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। যান্ত্রিক ক্রটির কারণে শনিবার বন্ধ হয়ে পড়ে উৎপাদন। তারও আগে আগস্টে যন্ত্রিক ত্রুটির কারণে আটকে যায় ফেঞ্চুগঞ্জে শাহজালাল সার কারখানার উৎপাদন। আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে নবনির্মিত এই কারখানায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরুর কথা ছিলো। সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছিলেন সংশ্লিষ্টরা। তবে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ায় দেশের সর্ববৃহৎ এই সারকারখানায় এখনো পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে কারখানার মিথেন এটর কুলারে এ ত্রুটি ধরা পড়লে পিছিয়ে যায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন।

অবশেষে যান্ত্রিক ত্রুটি সারিয়ে স্বপ্নের এই সার কারখানায় রবিবার সন্ধ্যা থেকে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হলো।

৫৪০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে নির্মাণ করা হয়েছে শাহজালাল সারকারখানা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ২৪ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাহজালাল সারকারখানা নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ‘শাহজালাল ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি’ স্থাপনের জন্য ২০১২ বছরের শুরুতে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় ১৫০ একর জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়। এরআগে চীন এবং বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে নির্মাণাধীন শাহজালাল সারকারখানা স্থাপনের লক্ষ্যে দু’ দেশের মধ্যে ঢাকায় একটি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চীনা সরকার এবং চীনের এক্সিম ব্যাংক প্রকল্প ব্যয়ের ৭০ শতাংশ (তিন হাজার নয়শত ছিয়াশি কোটি টাকা) ঋণ সহায়তা প্রদান করে। ঋণের বার্ষিক সুদের হার দুই শতাংশ ধরা হয়েছে। ২০ বছরে এ ঋণ পরিশোধ করতে হবে। প্রকল্প ব্যয়ের অবশিষ্ট এক হাজার চারশত তেইশ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার তার নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দিচ্ছে।

ফেঞ্চুগঞ্জ শাহজালাল সারকারখানাটি চীন এবং বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে নির্মিত হলেও এর প্রযুক্তিগত কারিগরী সহায়তা দিচ্ছে জাপান, আমেরিকা এবং নেদারল্যান্ড।

সারকারখানাটি চালু হলে প্রতিদিন ১৭৬০ মেট্রিক টন করে বছরে ৫ লক্ষ ৮০ হাজার ৮শ’ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদিত হবে এবং প্রতিদিন ১ হাজার মেট্রিক টন হিসাবে বছরে ৩ লক্ষ ৩০ হাজার টন অ্যামনিয়া উৎপাদিত হবে।

শাহজালাল সারকারখানা সূত্রে জানা যায়, ৩৮ মাসব্যাপী প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হয় চলতি আগস্টে। আগস্টেই পূর্ণ উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা ছিলো। তবে নির্মাণ বিলম্বের কারণে পিছিয়েছে উৎপাদন।

এ ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক কামরুজ্জামান বলেন, হরতালসহ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বৈরি আবহাওয়ার কারণে নির্মাণ কাজ কিছুটা পিছিয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত