জাহাঙ্গীর আলম ভুঁইয়া, তাহিরপুর

২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ১৪:৪৮

সামনে ঈদ: ব্যস্ত সময়ে সুনামগঞ্জের কামার শিল্পীরা

সুনামগঞ্জের ১১ উপজেলার হাট-বাজারের মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে প্রতিটি বাজারে ও হাওর পাড়ের কামাররা এখন ব্যস্ত সময় পার করছে।

ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে অনেকেই এখন কামারদের শরনাপন্ন হচ্ছেন। আর এই কোরবানী ঈদকে সমানে রেখে পশু জবাই ও কাটার জন্য পুরনো ঝং ধরা বটি, চাপাতি, দা, ছুরি, চাকুতে শান দিতে ও নতুনভাবে তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছে কামাররা।

আগুনে পুড়িয়ে লৌহদন্ডকে বিভিন্ন আকৃতি দিতে এখন হাতুরী পেটার টুং টাং শব্দে মুখরিত প্রতিটি বাজারের কামারশালার চারপাশ। লোহার মানের উপর নির্ভর করে তৈরী দা, চাপাতি, চাকু সহ বিভিন্ন রকমের জিনিস পত্রের দাম নির্ধারণ করে বিভিন্ন দামে বিক্রি করছে কামার শিল্পীগণ। আর অর্ডার দেওয়া কাষ্টমারদের সময় মত সকলের প্রয়োজনীয় সামগ্রীগুলো শান দিয়ে ও তৈরী করে দিতে রাত দিন কঠোর পরিশ্রম করছেন তারা।

এ কারণে জেলা তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, মধ্যনগর, দিরাই, শাল্লা, বিশ্বম্ভরপুর সহ ১১টি উপজেলার হাট বাজারের ছোট বড় কামারের দোকানে কাজের ধুম পড়েছে। দিন দিন এ শিল্পের প্রধান উপকরণ লোহা, ইস্পাত ও কয়লার দাম বেড়ে দাড়িয়েছে দ্বিগুণ। বাতাশ দেওয়ার বাতির দাম বেড়েছে। শ্রমিকদের মজুরী বেড়েছে ৩০০-৩৫০ টাকা।

কোরবানির এলেই কাজের ব্যস্ততা বেড়ে যায় কিন্তু শ্রমিক পাওয়া যায় না। তাই দা, চাকু, চাপাতি, বটির দাম একটু বেশী দামে বিক্রি করছে কামারা। এ সকল কারণে তারা অর্থ সংকটের সাথে এক প্রকার যুদ্ধ করছে।

জানা যায়, এক সময় কয়লা বাড়ি বাড়ি গিয়ে আনা হত প্রতি বস্তা ৩৫-৪০ টাকায় কিন্তু বর্তমানে এর দাম বেড়ে দাড়িয়েছে ১৪০-১৯০ টাকায় তাও আবার সব সময় পাওয়াও না। অধিকাংশ সময়ই এই কামারগণ বেকার সময় কাটান।

প্রতি মাসে নতুন বটি, দা, ছুরি, চাকু তৈরীতে ও পুরনোগুলোকে শান দিয়ে যে পরিমাণ অর্থ উপার্জন হয় তা দিয়ে তাদের সংসার চালানো কষ্ট কর হয়ে দাঁড়ায়। তাই অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় মনোনিবেশ করছেন।

কামার শিল্পীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সারা বছর তেমন কোন কাজ না থাকলেও ঈদ এলেই তাদের কদর বেড়ে যায়। দা, বটি, চাকু, চাপাতি তৈরী ক্রয় করতে আবার অনেকেই আসছেন পুরুনো ঝং ধরা অস্ত্রে শান দিতে যার কারণে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত