সামিউল্লাহ সমরাট, ঠাকুরগাঁও

১৩ জানুয়ারি, ২০১৫ ২১:২১

একটি আমগাছ, বিস্ময়ে সবাই তাকিয়ে রয়

কখনও কখনও সাধারন বিষয়ই বিস্ময়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায় । দেশের উত্তর জনপদের একটি সাধারন আমগাছ এখন অসাধারন হয়ে সকলের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে ।

ছবিঃ সামিউল্লাহ সমরাট

কখনও কখনও সাধারন বিষয়ই বিস্ময়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায় । দেশের উত্তর জনপদের একটি সাধারন আমগাছ এখন অসাধারন হয়ে সকলের  আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে । 
 
রংপুর বিভাগের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার প্রাচীন গ্রাম হরিনমারী । ভারতীয় সীমান্তবর্তী শান্ত ছিমছাম এই গ্রামেই মাথা উঁচু করে নিজের অবস্থান সদর্পে ঘোষণা করছে একটি আমগাছ । তেমন সঠিক কোন তথ্য না থাকলেও এলাকায় জনশ্রুতি আছে এই বিশালাকার গাছটির আনুমানিক বয়স দু’শ বছর। 
 
গাছটি দেখাশোনা করছেন শরিফ উদ্দিনের দুই ছেলে নুর ইসলাম আর সাইদুর রহমান। বাড়ির বাইরে থাকায় আমরা সাইদুর রহমানকে পাইনি। কথা বলেছিলাম নুর ইসলামের সাথে। নুর ইসলামের বাবার দাদা এই গাছটি লাগিয়েছিলেন গাছটির পাশেই তাঁর চায়ের দোকান । চা খেতে খেতে আলাপ জমে উঠল । ৭৪ শতাংশ ভূমি জুড়ে এই গাছটির ডালপালা বিস্তৃত ।গাছটির অসংখ্য ডালপালার মধ্যে ১৯ টি ডাল কাণ্ড থেকে বের হয়ে কিছুদূর গিয়ের মাটিতে হেলে পড়েছে । যে গুলো দেখতে একেকটি আলাদা গাছের মত । আর এ কারনেই দূর থেকে দেখলে আমগাছটিকে একটি ছোট আমবাগানের মতই মনে হয় । 
 
গাছটি এখনও ফলবান ।গাছটির অনন্য বৈশিষ্ট থাকায় এর আমের চাহিদা অনেক । তাই মুকুল ধরার সময় এলেই আম ব্যবসায়ীরা আগাম টাকা দিয়ে গাছটির ফলের আনুমানিক মূল্য দিয়ে ফল সংগ্রহ করা পর্যন্ত লীজ নিয়ে নেন । টাকার অংকে যা প্রায় লাখের কাছাকাছি ।সুর্যাপুরী জাতের এই গাছটি থেকে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ মণ আম পাওয়া যায় । কাঁচা অবস্থায় আম অত্যন্ত টক হলেও পাকা অবস্থায় এর স্বাদ অতুলনীয় । 
 
বালিয়াডাংগী উপজেলা সদর থেকে দশ কিলোমিটার পশ্চিমে নিভৃত পল্লী হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল থাকায় প্রতিদিনই বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক দর্শনার্থী এই আমগাছটি দেখতে আসেন । এটি এখন এই অঞ্চলের মানুষের বিনোদনের উপাদান ।
 
আমরা গল্প করতে করতে অনেক ভীর জমে গেল । কেউ কেউ গাড়ি রিজার্ভ করে দলবেঁধে, পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে এসেছেন । দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য মালিক  গাছটির আশে পাশে বসার ব্যবস্থা, গাড়ি পার্কিং, টয়লেটের বন্দোবস্ত করেছেন। অবশ্য এসব সুবিধার বিনিময় মূল্য দশ টাকা নির্ধারণ করা রয়েছে ।গাছটির নিয়মিত যত্ন নেয়া হয় । চারিপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য নিয়মিত কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়।এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেও এই গাছের ব্যপারে তাঁদের বেশ উচ্ছ্বাস রয়েছে বোঝা গেল । আমরা ফিরে আসব, নূর ইসলাম আমাদের সাথে সাথে খানিকটা পথ এগিয়ে এলেন । তাঁর জন্য দোয়া করতে বললেন যেন আমৃত্যু তিনি এই গাছটির দেখাশুনা করতে পারেন ।  

আপনার মন্তব্য

আলোচিত