রিপন দে

২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ১৬:৪৩

জলের গ্রাম অন্তেহরি

প্রকৃতি দুইহাতে তার রূপ বিলিয়ে দিয়েছে সিলেট বিভাগের প্রতিটি জেলা উপজেলায়। এই সিলেটে আছে হাওর-বাওর, পাহাড়-নদী, নানা জাতের বৃক্ষরাজি, আছে জলবন, সোয়াম্প ফরেস্ট।

এর অনেকটা পর্যটকদের কাছে পরিচিত হলেও অনেক এলাকা এখনো রয়ে গেছে প্রচারের আড়ালে। তেমনি একটি এলাকা মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার একটি গ্রাম। এই গ্রাম উপজেলার কাওয়াদীঘি হাওর সংলগ্ন জলের গ্রাম অন্তেহরী।

বছরে ৬-৮ মাস এই গ্রাম জলমগ্ন থাকে। জলমগ্ন এই গ্রাম, গ্রামের রূপ বাংলাদেশের আর অন্য কটা গ্রামের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। পুরো গ্রামই পানির উপর ভাসমান, ঠিক যেমন ভেসে আছে শাপলাসহ নানা জাতি-প্রজাতির জলজ উদ্ভিদ। গ্রামের প্রতিটি বাড়ির বাঁকে বাঁকে নানা প্রজাতির জলজ উদ্ভিদ যা এক অন্যরকম মোহনীয় দৃশ্য।

এই গ্রামেই আছে সোয়াম্প ফরেস্টের হিজল-তমাল-করচসহ বিভিন্ন গাছগাছালি। অন্তেহরি ছাড়াও আশেপাশের অনেকগুলো গ্রামে জলারবন রয়েছে। বড়ই অদ্ভুত এই গ্রামগুলোর দৃশ্য। কোনো গাছের হাঁটু পর্যন্ত ডুবে আছে পানিতে। একটু ছোট যেগুলো, সেগুলো আবার শরীরের অর্ধেকই ডুবিয়ে আছে জলে। কোথাও চোখে পড়বে মাছ ধরার জাল পেতেছে জেলেরা। কোথাও ঘন হয়ে জন্মানো গাছপালার কারণে কেমন অন্ধকার লাগবে পুরো বনটা। আবার কোথাও একেবারে ফাকা শুধু থই থই পানি।

মাঝেমধ্যেই গাছের ডালপালা আটকে দিবে পথ। হাত দিয়ে ওগুলো সরিয়ে তৈরি করতে হবে পথ। গাছের ডালে বাসা বেধেছে নানা প্রজাতির পাখি। আবার অনেক গাছে আশ্রয় নিয়েছে অনেক প্রজাতির বন্যপ্রাণী। বর্ষায় লোকালয় পানির নিচে চলে যায় তাই এসব বন্যপ্রাণী উঠে পড়ে গাছের ওপর। শীতকালে এখানে দাপিয়ে বেড়ায় বনবিড়াল, বেজি, শিয়ালসহ নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণী।  

সারা গ্রাম পানির নিচে থাকলেও ছোট একটি বাজার আছে অন্তেহরি গ্রামে। সেই বাজারে ডিঙি নৌকা নিয়ে এসে জড়ো হন আশেপাশের গ্রামবাসী। মনে হবে পানির উপর ভাসমান কোন এক জাহাজ।

যেভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে বাসে করে মৌলভীবাজার ৪৫০ (নন-এসি বাস) বা ট্রেনে শ্রীমঙ্গল। সেখান থেকে ৩০ টাকা ভাড়া দিয়ে মৌলভীবাজার। তারপর মৌলভীবাজারের চাঁদনীঘাট এলাকা থেকে সিএনজি অটোরিকশা করে কাদিপুর জনপ্রতি ভাড়া নেবে ৩৫ টাকা। সেখান ২-৩ ঘণ্টার জন্য নৌকা ভাড়া নেওয়া যাবে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত