সিলেটটুডে ডেস্ক

১৪ এপ্রিল, ২০১৬ ২৩:১৯

ছিল কাঁটাতারের বেড়া, তবু নববর্ষে দুই বাংলার মিলনমেলা

প্রাণের উৎসবে মিলল দুই বাংলা, তবে মাঝখানে ছিল কাঁটাতারের বেড়া। তবু বেড়ার ফাঁক গলে বিনিময় হয়েছে অশেষ মমতা, ভালোবাসা আর বাঙালিয়ানার টান।

রক্তের টানে হাজারো নারী-পুরুষ বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে জেলার রানীশংকৈলের কোচল ও হরিপুর চাপসা সীমান্তে নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত প্রিয়জনদের সঙ্গে কিছুক্ষণের জন্য মিলিত হয়। এ সময় নিকটজনদের পেয়ে আবেগ ধরে রাখতে না পেরে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।

মিলনমেলায় জন্য বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, রংপুর এবং ভারতের কোচবিহার, আসাম, দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, কলকাতাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বাই সাইকেল, অটোরিকশা, মাইক্রোবাস, মিনিবাস যোগে হাজারো মানুষ সীমান্তে হাজির হয়। এরপর  চলে প্রতীক্ষার প্রহর। দুপুরে পর দুই দেশের মানুষকে আসতে দেয়া হয় তারকাটার বেড়ার কাছে পরস্পরের সাথে দেখা করতে দেয়ার জন্য।

পহেলা বৈশাখের ভোর থেকে দুই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষেরা এসে জড়ো হন সীমান্তে। দীর্ঘদিন বিচ্ছিন্ন থাকা মানুষজন একে অপরের সঙ্গে মিলিত হবার এ সুযোগ হাত ছাড়া করতে চায়নি বলে ছুটে আসে স্বজনদের টানে।

প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ এদিনে দু’দেশের নিকটজনদের মিলিত হবার সুযোগ করে দেয়। সারা বছর দুই বাংলার মানুষ অপেক্ষা করে এই দিনটির জন্য।

মিলন মেলায় আসা  ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার রায়গঞ্জ থানার তফিজুল। তিনি বলেন, '১০ বছর পর ছোট ভাইয়ের দেখা সাথে দেখা করতে এসেছি। তার দেখা পেয়ে চোখে আনন্দ যেন বাঁধ মানছিল না ভাই তোফাজ্জল হোসেনকে দেখে। অনেক দিন দেখা না হলেও আজ রক্তের টান ঠিকই তাদের হাজির করেছে দু-দেশের সীমান্তের পাড়ে।'

ভারতের মাকড় হাটে থাকা ছোট বোন মরজিনাকে দেখতে আসা দিনাজপুরের আবুল হোসেন জানান, বাবা-মা নেই। আছে শুধু ছোট বোনটা। তাই মিলন মেলার সুবাদে বোনের সাথে দেখা করার সুযোগটা পেলে আর থাকতে পারি না। ছুটে আসি এখানে।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও ৩০ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্নেল তুষার বিন ইউনুস বলেন, 'রানীশংকৈলের কোচল ও হরিপুর চাপসা সীমান্তে নববর্ষ উপলক্ষে স্থানীয়দের আয়োজিত মিলন মেলা প্রতি বছরের এবারও নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে ঐ দুটি সীমান্তে ২ প্লাটুন বিজিবিসহ বিশেষভাবে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আমরা চাই এই মিলন মেলাটি আরো বড় পরিসরে ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হোক।'

ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈলে কোচল ও হরিপুর চাপসা সীমান্তে প্রতি বছর পাথর কালীর মেলা ও নববর্ষ উপলক্ষে বিজিবি ও বিএসএফের সম্মতিতে পাসপোর্ট ভিসা ছাড়াই দুইদেশের বসবাসবাসীদের এই সাক্ষাতের সুযোগের সৃষ্টি হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত