২৫ এপ্রিল, ২০১৬ ১৪:৩৭
‘আদালতে রায় বেচাকেনা হয়’ অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবুল বারকাতের এমন মন্তব্যের কারণে আদালত অবমাননার অভিযোগে শাস্তি দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে উচ্চ আদালতে একটি আবেদন করা হয়েছে।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) সুপ্রিমকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদনটি দাখিল করেন অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ। এর আগে গত ৬ এপ্রিল এ বিষয়ে এ আইনজীবী একটি উকিল নোটিশ পাঠান।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালত অবমাননার অভিযোগে পাঠানো নোটিশের জবাব দিতে বলেছিলেন এই আইনজীবী। যথাসময়ে লিগ্যাল নোটিশের জবাব না পেয়ে তিনি সোমবার উচ্চ আদালতে আদালত অবমাননার মামলা করলেন।
তিনি বলেন, যে মন্ত্রীকে আদালত অবমাননার অভিযোগ শাস্তি হিসেবে অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে তার চেয়ে বেশি গুরুতর আদালত অবমাননা করেছেন আবুল বারকাত।
ইউনুছ আলী বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সামনেই তিনি বিচার বিভাগ নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তার অপরাধ আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের চেয়েও মারাত্মক। কারণ মাহমুদুর রহমান শুধু বলেছিল ‘চেম্বার কোর্ট মানেই স্টে’। তিনি তার চেয়ে কঠিন কথা বলেছেন। তাই তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই আদালত অবমাননার জবাব দিতে বলা হয়েছিল। আমি এর জবাব না পেয়ে উচ্চ আদালতে আজ মামলা করলাম।’
গত ২ এপ্রিল (শনিবার) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আলোচনার এক পর্যায়ে অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বলেন, ‘আমার বলতে দ্বিধা নেই, গবেষণাভিত্তিক কথা এটা, লোয়ার কোর্ট থেকে শুরু করে হাইকোর্ট পর্যন্ত আইনের রায় বেচাকেনা হয়।’
আবুল বারকাতের এমন তথ্য দিয়ে বক্তৃতার পরে তার জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি সদর্পে বলতে পারি আমার বিচার বিভাগে কোনো মামলায় রায় বিক্রি হয় না। হ্যাঁ, এখানে হচ্ছে, আমি অস্বীকার করছি না। বড়জোর এটা পাঁচ থেকে দশ শতাংশ হতে পারে।’
অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাতের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা আরও বলেন, ‘যে এই প্রশ্ন তুলেছেন আপনি তো একটা প্রতিষ্ঠানের প্রধান (চেয়ারম্যান) ছিলেন আপনি কি সবার লোন (ঋণ) দিতে পেরেছেন।’
তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগ আলাদা কোনো দ্বীপের মতো না। এখানে সারা (সমাজে) ইরেগুলারিটিজ চলবে, আমার-আপনার ছেলেমেয়েরাই এ দেশের বিচারক। এ দেশের আইনজীবীরাও এ দেশের। আমরা সবার সঙ্গেই মিশে আছি। আর হঠাৎ বিচার বিভাগের সদস্যরা ফেরেশতা হয়ে যাবে- এটা কোনোমতেই আশা করা যায় না। এটা করলে আপনারা ভুল করবেন।’
ওই দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে আইনের সংস্কার ও আইন কমিশন’ এবং ‘সিলেক্টেড রাইটিংস অন ইন্টারন্যাশনাল ল : কনস্টিটিউশনাল ল অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’ শীর্ষক দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বই দুটির লেখক আইন কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. এম শাহ আলম।
আপনার মন্তব্য