সিলেটটুডে ডেস্ক

২০ জুন, ২০১৬ ১৭:৪৯

বিয়ের পিঁড়িতে ৭০ বছরের সাবেক চেয়ারম্যান

বয়স ৭০ বছর। তাতে কি? শরীরটা বার্ধ্যক্যে পড়লেও মন তো আর বুড়ো হয়নি। কথাগুলো জিয়ানগর উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ৭০ ঊর্ধ্ব আলহাজ সামসুর রহমান খানকে নিয়ে।
 
সার্টিফিকেটে ৭০ বছর হলেও সঠিক বয়স আরও অনেক বেশি। বয়সের ভারে ন্যুজ এ ব্যক্তি শেষ জীবনে বিয়ের পিঁড়িতে বসায় এলাকায় তাকে নিয়ে আনন্দের ফুলঝুড়ি ঝড়ছে।
 
শুক্রবার সকালে চণ্ডিপুর কাজী অফিসে তার নিকট আত্মীয়দের উপস্থিতিতে বালিপাড়া গ্রামের জাহানুর বেগমের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি।
 
তবে তার বয়স ৭০ হলেও নববধূর বয়সও একেবারে কম নয়। ৪০ ছুঁই ছুঁই। অবশ্য বছর চারেক আগে তার স্বামী ফজলু মৃধা মারা গেলে বিধবা হন তিনি।
 
স্বামীর মৃত্যুর পর দুই ছেলে আর এক মেয়েকে নিয়ে অসহায়ত্বের এ জীবনে জাহানুর বেগম যেমন নতুন ঘর আর বর পেয়ে খুশি, তেমনি চিরকুমারের খাতা থেকে নিজের নামটি বাদ দিতে পেরে বর নিজেও বেশ উৎফুল্ল।
 
সামছুর রহমান খান সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে খুলনা সিটি কলেজের ছাত্র সংসদের নেতা ছিলেন তিনি। এছাড়া ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেন।
 
অল্প সময়ের ব্যবধানে কলেজে ছাত্র রাজনীতি ডিঙ্গিয়ে খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পান।
 
এরপর পড়াশুনা শেষে নিজ গ্রামে এসে ১৯৮৮ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দাঁড়ালে মাত্র ৩৪ বছর বয়সেই চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
 
এসময় তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেও জড়িয়ে পড়েন। বর্তমানে তিনি জাতীয় পার্টির (জেপি) জিয়ানগর উপজেলা আহ্বায়ক।
 
নিজ ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলায় ছোট বড় সকলের কাছে একজন জনপ্রিয় নেতা 'সামছু ভাই' হিসেবে পরিচিতি পান তিনি।
 
ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে সমাজসেবা আর রাজনীতির পিছনে সময় দিতে গিয়ে ৭০টি বছর পেরিয়ে গেছে তার।
 
ছাত্রজীবনে পিতা আর মধ্য বয়সে মাকে হারিয়ে এক প্রকার একাকিত্ব জীবন চলে তার। রান্নার কাজ থেকে শুরু করে সংসারের যাবতীয় কাজ এবং নিজের দেখাশুনা নিজেই দেখভাল করতেন তিনি।
 
তবে তাকে সাংসারিক জীবন অর্থ্যাৎ বিয়ের আসনে বসাতে এর আগে বহুবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন তার আত্মীয় স্বজন ও শুভাকাঙ্খীরা।
 
শুক্রবার দুপুরের দিকে আচমকা তার এ বিয়ের খবরটি ছড়িয়ে গেলে এলাকার সব বয়সী নারী পুরষের কাছে মুখরোচক সংবাদে পরিণত হয়। উভয়ের পারিবারিক সম্মতিতে এ বিয়ে হওয়ায় স্বজনদের মধ্যেও যেন আনন্দের বান ডেকেছে।
 
বর শামছুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, শেষ বয়সে বিয়ের পিঁড়িতে বসে বাকি জীবনটা একটু আরাম আয়েশে কাটাতে চাই। আমাকে নিয়ে আপনাদের যেভাবে কৌতুহল জেগেছে সেটা আমার মনে করার কিছু নাই। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।
সূত্র : যুগান্তর

আপনার মন্তব্য

আলোচিত