জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ থেকে

০২ জুলাই, ২০১৬ ২০:৪৬

ঝিনাইদহে সেবায়েত হত্যায় মামলা, জামায়াত-শিবিরসহ গ্রেফতার ২৯

ঝিনাইদহে শ্রী শ্রী রাধা মদন গোপাল বিগ্রহ মঠের সেবায়েত শ্যামানন্দ দাস হত্যার ঘটনায় ঝিনাইদহ সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে (মামলা নং ২)।

মঠের সভাপতি সুবল চন্দ্র বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করে শুক্রবার (১ জুলাই) মধ্যরাতে এ হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমান।

ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ জানান, খুনিদের গ্রেফতার করতে ব্যাপক পুলিশি অভিযান চালানো হচ্ছে। পুরোহিত আনন্দ গোপাল ও সেবায়েত শ্যামানন্দ হত্যার সাথে জড়িতদের ধরতে ঝিনাইদহে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, শুক্রবার রাত থেকে এ পর্যন্ত একজন শিবির ও চার জামায়াত নেতাসহ ২৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই জোরদার অভিযান চলবে বলেও তিনি জানান।

তবে জেলাব্যাপী মোতায়েনকৃত পুলিশের সংখ্যা ৪০০ হবে বলে একটি সূত্র জানায়। শুক্রবার দুপুর থেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে রিজার্ভ পুলিশ বাসযোগে ঝিনাইদহে আসতে থাকে।

উল্লেখ্য শুক্রবার ভোরে পূজার জন্য ফুল তোলার সময় ৩ জন দুর্বৃত্ত মোটরসাইকেলযোগে এসে শ্যামানন্দ দাসকে মন্দিরের সামনে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। শ্যামানন্দ দাসকে মঠের মধ্যেই সমাহিত করা হয়েছে। এর আগে চলতি বছরের গত ৭ জুন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার করোতিপাড়া গ্রামের আনন্দ গোপাল গাঙ্গুলী, ৭ জানুয়ারি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কালুহাটী গ্রামের বেলেখাল বাজারে খ্রিস্টান হোমিও চিকিৎসক সমির বিশ্বাস ওরফে সমির খাজা ও ১৪ মার্চ কালীগঞ্জ শহরের নিমতলা এলাকার শিয়া মতবাদের হোমিও চিকিৎসক আব্দুর রাজ্জাককে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

এই চার হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএস দায় স্বীকার করে বিবৃতি প্রচার করে। পুলিশের পক্ষ থেকে আইএস এর দায় স্বীকারের বিষয়টি ভুয়া এবং জামায়াত শিবিরের কাজ বলে সাংবাদিকদের জানানো হয়।

পুলিশের খুলনা রেঞ্জের এসএম মনির-উজ-জামান এ সব হত্যাকাণ্ডের পর ঝিনাইদহ এসে সভা সমাবেশে স্বাধীনতা বিরোধীদের দায়ী করে বক্তব্য দেন।

এদিকে নিহতদের স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ সব মামলার অগ্রগতির বিষয়ে তারা সন্তুষ্ট নয়। দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি তাদের নজরে না পড়ায় হত্যাকাণ্ডের শিকার পরিবারগুলো হতাশ।

তবে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ আগেই জানিয়েছেন, হোমিও চিকিৎসক সমির খাজা, পুরোহিত আনন্দ গোপাল ও কালীগঞ্জের হোমিও চিকিৎসক আব্দুর রাজ্জাক হত্যার ক্লু ও মোটিভ পুলিশ উদ্ধার করেছে।

এ সব মামলায় কয়েক জন গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে আছেন বলেও তিনি জানান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত