সিলেটটুডে ডেস্ক

২৫ জুলাই, ২০১৬ ১৮:৫৬

‘জঙ্গি’ মুন্না ঘরে ফিরলেন নতুন বউ নিয়ে

টেলিভিশনে খেলা দেখা নিয়ে মায়ের সাথে রাগারাগি করে ঘর ছেড়েছিলেন কিন্তু পুলিশের খাতায় নাম এল জঙ্গি হিসেবে। পরে প্রেমিকাকে বিয়ের করা নিয়ে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারেন জঙ্গি তালিকায় তাঁর নাম।  অবশেষে নববধূকে নিয়ে ঘরে ফেরার পর ভাঙল সকল সংশয়।  ঘটনাটি যশোরের। যশোর পুলিশের প্রকাশিত তালিকায় ‘জঙ্গি’ হিসেবে কামরুজ্জামান তুহিন ওরফে মুন্না ঘরে ফিরে এসেছেন।

সোমবার (২৫ জুলাই) ভোরে নববধূকে নিয়ে যশোর শহরের শংকরপুর গোলপাতা মসজিদ এলাকার নিজ বাড়িতে ফেরেন মুন্না। তিনি ওই এলাকার আবদুস সোবহানের ছেলে।

ফেরার পর জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করে কামরুজ্জামান মুন্না বলেন, ২০১৪ সালের জুলাই মাসে মায়ের সঙ্গে রাগারাগি করে ঢাকায় যাওয়ার পর কেরানীগঞ্জের জিনজিরা এলাকায় একটি ডেকোরেটরের দোকানে কাজ নেন। এরপর পুরান ঢাকার ইসলামবাগে মাইশা প্লাস্টিক কোম্পানিতে চাকরি নেন। সেখানে থাকার সুবাদে ইয়াসমিন আক্তারের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে মেয়ের পরিবার বিষয়টি জানতে পারে। এরপর মেয়ের পরিবার থেকে বলা হয় অভিভাকরা না এলে বিয়ে হবে না। এরপর মুন্না বাড়িতে যোগাযোগ করে বিয়ের কথা জানান। দুই বছর পর ছেলের সন্ধান পেয়ে মুন্নার স্বজনরা ঢাকায় যায়। এরপর বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে।


তার ছোটভাই যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের ছাত্র আবদুল আহাদ জানান, মুন্না নিখোঁজের বিষয়ে তারা যখন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে আসেন তখন যা লিখতে চেয়েছিলাম, পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। পুলিশ নিজ ইচ্ছামতো জিডি লিখেছে, যেখানে আমার ভাইকে জঙ্গি হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।’ আবদুল আহাদ আরও জানান, যেহেতু ভাই ফিরে এসেছে, তাই আরেকটি জিডি করতে চাই। জিডি লিখেও এনেছি। কিন্তু বিকেল পর্যন্ত ডিউটি অফিসার জিডি নেননি।

এদিকে মুন্না থানায় আসার খবরে বেলা পৌনে একটার দিকে কোতোয়ালি থানায় আসেন যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান। তিনি থানার অফিসার, মুন্না ও তার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন।

ছবি: বাংলামেইল২৪ডটকম


থানায় এসপি সাংবাদিকদের বলেন, ‘মুন্নার পরিবারের পক্ষ থেকে জিডি করে বলা হয়েছিল সে নিখোঁজ, জঙ্গি তৎপরতায় সংযুক্ত হতে পারে। পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থা তার খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারে প্রায় তিন বছর তার খোঁজ নেই। ফলে তাকে জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত বলে ধরে নেয় পুলিশ।’

প্রসঙ্গত, রোববার (২৪ জুলাই) জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় পুলিশ পাঁচজন জঙ্গির ছবি সংবলিত পোস্টার হস্তান্তর করেছে কমিটির সদস্যদের মধ্যে। ওই পোস্টারে যশোর শহরের শংকরপুর গোলপাতা মসজিদ এলাকার আবদুস সোবাহানের ছেলে কামরুজ্জামান তুহিন ওরফে মুন্নার (২৪) নাম ও ছবি রয়েছে। পুলিশের তালিকাভূক্ত অপর চার সন্দেহভাজন জঙ্গি হলেন, যশোর সদর উপজেলার কিসমত নওয়াপাড়া এলাকার কাজী হাবিবুল্লাহার ছেলে ও সরকারি এমএম কলেজের ছাত্র কাজী ফজলে রাব্বি (২১), শার্শা উপজেলার শ্যামলাগাজি গ্রামের আওরঙ্গজেবের ছেলে মেহেদী হাসান জিম (১৯), যশোর শহরের ধর্মতলা এলাকার আবদুস সালামের ছেলে রায়হান (২১) ও মণিরামপুর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের মৃত হাসান আলী গাজীর ছেলে জিএম নাজিম উদ্দিন ওরফে নকশা নাজিম (৪২)।

সূত্র: বাংলামেইল

আপনার মন্তব্য

আলোচিত