ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

৩১ জুলাই, ২০১৬ ২২:৪৯

ঝিনাইদহে আবারো দুই মহিলার কঙ্কাল চুরি

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার বলরামপুর গ্রাম থেকে কবর খুড়ে আবারো দুই মহিলার কঙ্কাল চুরি হয়েছে। এ নিয়ে ১৯ দিনের ব্যবধানে ৮ ব্যক্তির কঙ্কাল চুরি হলো। একের পর এক লাশের কঙ্কাল ও হাড়গোড় চুরি হওয়ায় গ্রামে গ্রামে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

রোববার ভোর রাতে বলরামপুর গ্রামবাসী দেখতে পান গ্রামের সরোয়ার মন্ডলের স্ত্রী হামিদা খাতুনের কবর খুড়ে হাড়গোড় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে তারা বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানান। হামিদা খাতুন গত ১মে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন বলে তার স্বামী সরোয়ার মন্ডল জানান।

এদিকে একই গ্রামের খলিলুর রহমানের স্ত্রী আনেছা খাতুন গত ১৭ রমজানে সাপে কেটে মৃত্যু বরণ করেন। তার কবর থেকেও হাড়গোড় চুরি হয়ে গেছে বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। এ নিয়ে গোটা গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রিয়জনদের লাশের কঙ্কাল একের পর এক চুরি হওয়ার কারণে স্বজনদের মাঝে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।

এদিকে গত জুলাই মাসে হরিণাকুন্ডুর গাজিপুর গ্রামের ৬ জনের কবর থেকে কঙ্কাল চুরি হলেও পুলিশ এখনো এই চক্রকে ধরতে পারেনি। দুর্বৃত্তদের উদ্দেশ্য নিয়েও জনমনে নানা শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গ্রামবাসী জানান, গত ১৩ জুলাই গাজীপুর গ্রামের রমজান আলী ব্যাপারীর কবর খুঁড়ে প্রথম কঙ্কাল চুরি করে দুর্বৃত্তরা। এরপর পর্যায়ক্রমে একই গ্রামের নবীন মিয়া, ফজলুর রহমান, মসজিদের ইমাম ইদ্রিস আলী, বুদো ও নিহাল মন্ডলের স্ত্র্রী রহিমা খাতুনের কবর থেকে চুরি করে নিয়ে যায়।

স্থানীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন আব্দুল জলিল জানান, আগে রাতে চলাচল করতে ভয় পেতাম না, কিন্তু কঙ্কাল চুরির পর থেকে একা একা মসজিদে আসতেও ভয় লাগে।

কঙ্কাল চুরি হওয়া রমজান আলীর ছেলে হামিদুল ইসলাম হামিদ জানান, তার বাবার কবর থেকে কে বা করা কঙ্কাল চুরি করে নিয়ে যায়। এরপর গত ২৬ ও ২৭ জুলাই পর্যায়ক্রমে একই গ্রামের আরো ৫ দিনের কবর খুড়ে হাড়গোড় তুলে নিয়ে যায়।

নবীন মিয়ার মেয়ে শিলা খাতুন জানান, তার বাবাকে ৬ বছর আগে হত্যা করে লাশ গুম করে রাখে সন্ত্রাসীরা। এক মাস পর পুলিশ গলিত লাশ উদ্ধার করে। বাবার স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে তাকে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করি। তিনি আরো জানান, মাঝে মধ্যে বাবার কবর জিয়ারত করতে সেখানে যেতাম। কঙ্কাল চুরি হওয়ার পর আমরা চরম ভাবে ক্ষুদ্ধ ও মর্মাহত।

একের পর এক কবর থেকে লাশ চুরি হওয়ার পর এলাকায় চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়েছে। তাহেরহুদা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনজুর আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিষয়টি আমরা পুলিশকে জানিয়েছি। আমি নিজেও গাজীপুরের কবরাস্থানে গিয়ে ঘটনাটি দেখে এসেছি।

হরিণাকুন্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহাতাব উদ্দীন জানান, আগের কবরগুলো আমি দেখেছি। সেগুলো ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে হয়তো স্বজনরা মনে করছে লাশের কঙ্কাল চুরি হয়েছে। বিষয়টি সত্য নাও হতে পারে। রোববার ভোর রাতে বলরামপুর গ্রামের দুই মহিলার কবর দেখে এসে তিনি জানাতে পারবেন বলে জানান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত