সিলেটটুডে ডেস্ক

২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১৫:৫০

মাদ্রাসার নামে তোলা চাঁদা জমা হয় জেএমবির তহবিলে!

সিরাজগঞ্জে আটক নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিনের (জেএমবি) চার সদস্য দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা তুলে সংগঠনের তহবিল গঠনের কাজ করছিল। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে জেএমবির তৎপরতা ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার নেটওয়ার্ক সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘এরানদহ জামায়েতুল ক্যাডেট মাদ্রাসা’র নাম ব্যবহার করে তহবিল সংগ্রহের এই কাজ চালিয়ে আসছিলো তারা।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) ভোরে চার জেএমবি সদস্যকে আটকের পর দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।

মঙ্গলবার জেএমবি’র সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আমির ও তার দু’ছেলেসহ ৪ সন্দেহভাজন সদস্যকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। মঙ্গলবার ভোর ৫ টায় জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা থানার এরানদহ গ্রামের জামায়াতুল ক্যাডেট মাদ্রাসা থেকে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন, সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার এরানদহ গ্রামের অধিবাসী ও জেএমবি’র সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি/আমির মো. জয়নাল আবেদীন (৫৫), তার দু’ছেলে বোরহান উদ্দিন (২৮) ও ইমরান আলী (২৬) এবং কাজিপুর উপজেলার গান্ধাইল গ্রামের অধিবাসী ও জেএমবির জেলা শাখার ক্যাশিয়ার মো. আবু বকর সিদ্দীক (৫০)।

পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদের নির্দেশে ডিবি পুলিশের ওসি মো. ওয়াহেদুজ্জামান এবং সেকেন্ড অফিসার এসআই রওশন আলী ও এসআই ইয়াসির আরাফাত ফোর্স নিয়ে তাদের আটক করেন বলে জানিয়েছে ডিবি। আটককৃতদের কাছ থেকে ১০টি ককটেল, গান-পাউডার এবং বোমা তৈরির সারঞ্জাম ও বিপুল পরিমাণ জিহাদি বই জব্দ করা হয়েছে। জেলার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রাথমিকভাবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

ডিবির সেকেন্ড অফিসার উপ-পরিদর্শক রওশন আলী জানান, জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে জেএমবির তৎপরতা ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার নেটওয়ার্ক সৃষ্টিতে এরানদহ জামায়েতুল ক্যাডেট মাদ্রাসা থেকে গোপনে এরা দীর্ঘদিন থেকে চাঁদা সংগ্রহ ও তহবিল তৈরি করছিল। ডিবি পুলিশ এ তথ্য জানতে পেরে গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে তাদেরকে ১০টি ককটেল, বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও বিপুল পরিমাণ জিহাদি বইসহ আটক করে। আটককৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জেএমবির কর্মকাণ্ড পরিচালনার কথা স্বীকার করেছেন।

তিনি জানান, জেলায় বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনার উদ্দেশ্যে তারা দীর্ঘদিন থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছিল— এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের আটক করা হয়। ইসলাম ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে এরা গোপনে গোপনে সদস্য সংগ্রহের পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করছিল। আটক ব্যক্তিরা গোপনে জেএমবির কর্মকাণ্ড পরিচালনায় অর্থের জোগান দিয়েছে বলে তথ্য রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত এক বছরে সিরাজগঞ্জ জেলায় ডিবি পুলিশ এ পর্যন্ত জেএমবি’র ২৫ জন সন্দেহভাজন সদস্যকে আটক করেছেন। এর মধ্যে রয়েছেন ৮ জন নারী। আটক নারীদের মধ্যে ৪ জন আবার ফিদায়ি জেহাদ বা আত্মঘাতী দলের সদস্য।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত