সিলেটটুডে ডেস্ক

২৯ অক্টোবর, ২০১৬ ১৬:১৭

দিনাজপুরে নির্যাতিত পাঁচ বছরের শিশুর অবস্থার কিছুটা উন্নতি

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ধর্ষণসহ পাশবিক নির্যাতনের শিকার পাঁচ বছরের শিশুর অবস্থার কিছুটা উন্নতি বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

তাকে স্বাভাবিক করার চেষ্টায় কাউন্সিলিং করা হচ্ছে। তার বেডের চারপাশে বেলুন লাগিয়ে ও খেলনা দিয়ে তাকে আনন্দে রাখারও চেষ্টা চালাচ্ছেন কাউন্সিলররা।

ঢামেক হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) তত্ত্বাবধায়ক ডা.  বিলকিস বেগম শনিবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে জানান, আগের চেয়ে শিশুটি কিছুটা ভালো আছে। কাউন্সিলররা শিশুটির চারপাশে বেলুন সাজিয়ে ও খেলনা দিয়ে তার মানসিক অবস্থা পরির্বতনের চেষ্টা চালাচ্ছেন।

শিশুটির উন্নত চিকিৎসায় গঠিত ৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড প্রধান গাইনি বিভাগের অধ্যাপক সালমা রউফ জানান, ‘শিশুটি অবস্থা আগের চেয়ে অনেকটা ভালো। বৃহস্পতিবার সকালে আমি নিজেও তাকে দেখে এসেছি। বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুসারে শিশুটির চিকিৎসা চলছে।’

শিশুটির সঙ্গে থাকা স্বজনেরা জানান, আগের চেয়ে শিশুটি ভালো আছে। তবে তার মা চোখের আড়াল হলেই শিশুটি কাঁদে। মায়ের কাছে শুধু বায়না ধরে। শিশুটি মাকে বলে, ‘আমাকে কোলে নিয়ে ঘোরাও। আমি টিভি দেখবো। আমি এটা খাবো, সেটা খাবো’। বৃহস্পতিবার সকালে শিশুটি তার মাকে বলে, ‘আমি দৌড়াতে পারি না, আমি হাঁটবো’।

উল্লেখ্য, দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার জমিরহাট তকেয়াপাড়া গ্রামে গত ১৮ অক্টোবর (মঙ্গলবার) বর্বরোচিত ওই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। সকালে বাড়ির বাইরে খেলতে যাওয়ার পর শিশুটিকে পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর রাত ১১টার দিকে পার্বতীপুর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন শিশুটির বাবা।

পরদিন ১৯ অক্টোবর (বুধবার) ভোর ৬টায় শিশুটিকে বাড়ির পাশের হলুদ ক্ষেত থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৫ অক্টোবর (মঙ্গলবার) ভোরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে  ভর্তি করা হয় শিশুটিকে।

এ ঘটনায় নির্যাতিতা শিশুর বাবা গত ২০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) প্রতিবেশী মাদকসেবী সাইফুল ইসলাম (৪১) ও আফজাল হোসেন কবিরাজকে (৪৭) আসামি করে পার্বতীপুর মডেল থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। ধর্ষক সাইফুল ইসলামকে আটক করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

শিশুটির সঙ্গে থাকা  স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন, সাইফুলই বেলা ১২টায় শিশুটিকে হলুদ ক্ষেতটিতে নিয়ে যান। পরে আফজাল হোসেন কবিরাজকে নিয়ে যৌনাঙ্গ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে  ধর্ষণ করেন। শিশুটির বুকে কামড় এবং গলাসহ শরীরে বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত করেন। নির্যাতনের পাশাপাশি শিশুটির শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকাও দেওয়া হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত