সিলেটটুডে ডেস্ক

২৭ নভেম্বর, ২০১৬ ১৩:৩৪

সাঁওতালদের মামলার বাদী নিখোঁজ!

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতালদের ওপর হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার বাদী স্বপন মুরমুকে গত ১০ দিন ধরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি করেছে তাঁর পরিবার।

স্বপন মুরমু দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার মুয়ালীপাড়া গ্রামের সমেস মুরমুর ছেলে। তিনি বাঁশের তৈরি ডালি, কুলা, চালন বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

স্বপন মুরমু স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে আছেন, নাকি তাকে অপহরণ করা হয়েছে- এ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে রহস্য।

উল্লেখ্য, গত ৬ নভেম্বরে সাঁওতালদের অপর হামলার ১০ দিন পর ১৬ নভেম্বর স্বপন মুরমু বাদী হয়ে ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলা করেন। মামলার পর এ পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

স্বপন মুরমুর স্ত্রী জোসনা মার্ডি গণমাধ্যমকে জানান, ১০ দিন আগে কাজের কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন তাঁর স্বামী। এরপর তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। তাঁর সঙ্গে কোনো যোগাযোগও হয়নি। তবে স্বামী নিখোঁজের বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়নি বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রতকুমার সরকার জানান, স্বপন মুরমুর নিখোঁজ থাকার বিষয়টি তাঁর জানা নেই। তাঁর নিখোঁজের বিষয়ে পরিবার বা অন্য কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি।

এদিকে সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম আদিবাসী ভূমি উদ্ধার কমিটির সহ-সভাপতি ফিলিমন বাসকের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, কিছু লোকজনকে হয়রানি, সাঁওতালদের প্রশ্নবিদ্ধ ও বিশেষ প্রভাবশালী মহলের স্বার্থ রক্ষায় স্বপনকে দিয়ে মামলাটি দায়ের করান একটি প্রভাবশালী মহল। মামলাটি নিয়ে আগে থেকেই সন্দেহ প্রকাশ করছিল সাঁওতালরা।

এদিকে, ঘটনার ২০ দিন পর সাঁওতালদের পক্ষে সাপমারা ইউনিয়নের হরিণমারী নতুরন পল্লি গ্রামের মঙ্গল হেমব্রমের ছেলে থোমাস হেমব্রন বাদী হয়ে ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে আসামি করে শনিবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে গোবিন্দগঞ্জ থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আসামি হিসেবে গাইবান্ধা-৪ আসনের (গোবিন্দগঞ্জ) সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল হান্নান, রংপুর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল আউয়াল, সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাকিল আহম্মেদ বুলবুল, কাটাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করীম রফিক ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ ফকুর নাম রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ৬ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জে আখ কাটাকে কেন্দ্র করে আদিবাসী সাঁওতালের সঙ্গে শ্রমিক-কর্মচারী ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এ সময় সাঁওতালদের ছোঁড়া তীর-ধনুকের আঘাতে ৯ পুলিশ তীরবিদ্ধসহ ৩০ জন আহত হন। নিহত হন ৩ সাঁওতাল। এরপর ওইদিন বিকেলে তাদের উচ্ছেদ করে ঘরে আগুন দেয়া হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত