১৮ মে, ২০১৭ ১৭:১৪
রাঙামাটির কাউখালী উপজেলায় পাহাড়ি এক তরুণীকে অপহরণ করে দুই মাস আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
৯ মার্চ কাউখালী থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। আর ৪ মে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার ইসলামপুর গ্রাম থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে ১০ মে রাতে তরুণীর বাবা বাদী হয়ে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ১৩নং ইসলামপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা নুরুল আলম (৩০) এর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
তবে অভিযুক্ত নুরুল আলম জানান, ‘অপহরণ বা ধর্ষণ নয়, দু’জনের সম্মতিতে সব হয়েছিলো।’
মামলার এজাহারে উল্লেখ আছে, ৯ মার্চ বিকালে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে উপজেলার ঘাগড়া-কাউখালী সড়কে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন ওই তরুণী। এ সময় একটি অটোরিকশা থেকে নেমে দুই যুবক মুখ চেপে ধরে তাকে তুলে নিয়ে যায়। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একটি ঘরে আটকে রাখে ওই দুই যুবক। ঘরে আর কেউ ছিল না। প্রতিদিন এক যুবক ঘরে এসে খাবার দিয়ে যেতো। সেই তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছে।
৪ মে ওই যুবক খাবার দেওয়ার পর তার মুঠোফোন ভুলে ফেলে চলে যান। পরে তার ভাইকে ফোন করেন ওই তরুণী। সেদিন রাতে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
তবে নুরুল আলম অপহরণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অজ্ঞাত স্থান থেকে মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘মেয়েটি তার ভাইয়ের সঙ্গে ঝগড়া করে আমার সঙ্গে চলে আসে। এ কারণে আমার এক পরিচিতের বাড়িতে তাকে রাখি। আমি তো সব সময় বাসায় থাকতাম না। সে চাইলে তো চলে যেতে পারতো।’ ওই তরুণীর সঙ্গে কোন শারীরিক সম্পর্ক হয়নি বলেও দাবি করেছেন নুরুল আলম।
যে বাড়ি থেকে ওই তরুণীকে উদ্ধার করা হয়েছে সেই বাড়ির মালিক মো. কালাম মাস্টার জানান, নুরুল আলম তার পরিচিত। স্ত্রী পরিচয়ে মেয়েটিকে নিয়ে তার বাড়িতে উঠেছিল নুরুল আলম। এখন সে পলাতক।
কাউখালী থানার এসআই মো. সুজন জানান, ‘আসামিকে ধরতে সোর্স নিয়োগ দিয়েছি। সবচেয়ে বড় সমস্যা আসামি রাঙামাটি জেলায় না, তারা চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়ার বাসিন্দা। আমরা প্রতিনিয়ত খোঁজ-খবর নিচ্ছি।’
মামলার আইও মো. সুজন আরো জানান, ‘আমি মেয়েটির সঙ্গে কথা বলেছি। মেয়েটি আমাকে জানায়, ছেলেটি তাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে নিয়ে যায়। যখন দেখলো ছেলেটি ভালো না তখন সে তার ভাইকে ফোন করে তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে তার পরিবারের লোকজন ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানালে তিনি মেয়েটিকে তার পরিবারের কাছে তুলে দেন। এ বিষয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ২০০০ (সংশোধিত) ২০০৩ আইন এর ৭, ৯(১) ধারার মামলা করা হয়েছে।’
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য প্রফেসর বাঞ্ছিতা চাকমা বলেন, ‘মানবাধিকারের চরম অন্যায় এটি। এসব ঘটনার কোন বিচার না হওয়ায় দিন দিন এসব অন্যায় আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। আমি চাইবো অন্তত পুলিশ এই অপরাধীকে ধরে আইনের মাধ্যমে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবে। যাতে আর এই অন্যায় করার আর কেউ সাহস না পায়।’
আপনার মন্তব্য