বেনাপোল প্রতিনিধি

০৪ আগস্ট, ২০১৭ ২২:২৪

বেনাপোলে বিজিবি কর্তৃক সাংবাদিক নিপীড়নের প্রতিবাদে মানববন্ধন

বেনাপোল চেকপোস্টে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র অনিয়ম নিয়ে রিপোর্ট করায় বন্দর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলানিউজের স্টাফ রিপোর্টার আজিজুল হককে ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার (সিও) লে. কর্নেল আরিফ কর্তৃক মারধরের ঘটনায় প্রতিবাদ মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে স্থানীয় সাংবাদিকরা।

শুক্রবার (৪ আগস্ট) বিকেলে বেনাপোল আইসিপি বিজিবি ক্যাম্পে ডেকে নিয়ে আজিজুল হকের উপর এ বর্বরোচিত হামলায় তীব্র প্রতিবাদ, নিন্দা জানায় স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ। 

এ সময় বেনাপোল বন্দর প্রেসক্লাবের সভাপতি শেখ কাজিম উদ্দিন বলেন, একজন সাংবাদিকের লেখনির মধ্যে যদি কোনও ধরনের ভুল ধরা পড়ে তাহলে দেশের সংবিধান তথা প্রচলিত আইনানুযায়ি সে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করতে পারে। সেখানে ৪৯ বিজিবির সিও আরিফ কর্তৃক একজন পেশাদার সাংবাদিকের উপর সন্ত্রাসী কায়দায় বুট পরিহিত অবস্থায় লাথি, চড়, ঘুষির মতো এমন বর্বরোচিত হামলা আমরা কল্পনাও করতে পারি না।

এ ঘটনার প্রতিবাদে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন শার্শা প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুল মুননাফ, সাধারণ সম্পাদক ইয়ানুর রহমান, প্রেসক্লাব বেনাপোলের সাংবাদিক জামাল হোসেন, সাজেদুর রহমান, মনির হোসেন, বেনাপোল বন্দর প্রেসক্লাবের সভাপতি শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল প্রেসক্লাবের সভাপতি এনামুল হক, বাংলানিউজের যশোর স্টাফ রিপোর্টার উত্তম ঘোষ, বাগ আঁচড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মুকুল, সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদসহ বেনাপোল বন্দর প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি আবুল বাশার, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক আনিছুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান বাবু, শাহনেওয়াজ মল্লিক স্বপন, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান রিপন, শাহিন, সাহাবুদ্দিন প্রমুখ

এ ঘটনায় সাংবাদিক আজিজুলসহ তার পরিবারের সদস্যরা বিজিবি কর্তৃক আবারো হামলার ভয়ে আতঙ্কিত রয়েছেন।

যা ঘটেছিল
‘বেনাপোল সীমান্তে অরক্ষিত বাংলাদেশ প্রবেশ দ্বার’ শিরোনামে বাংলানিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট আজিজুল হকের একটি রিপোর্ট বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) প্রকাশিত হয়। এতে চেকপোস্টে দুই দেশের নিরাপত্তার ধরন তুলে ধরেন তিনি।

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও কাস্টমস কর্মকর্তারা ওপারের প্রবেশদ্বারে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করলেও বাংলাদেশের প্রবেশদ্বারগুলো পাওয়া যায় সম্পূর্ণ অরক্ষিতভাবে। বিজিবি সদস্যদের সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকার কথা থাকলেও তারা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেন না। এ ঘটনার সব রকম তথ্য-প্রমাণসহ রিপোর্ট করেন আজিজ।

রিপোর্ট প্রকাশের আগে বিজিবির ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন আজিজ। পরে রিপোর্ট প্রকাশ হলে ওইদিন বিকেলেই ক্যাম্প কমান্ডার আব্দুল ওয়াহাব তাকে সিও দেখা করতে বলেছেন বলে ডেকে পাঠান। এসময় আজিজ তার কাছে সব ধরনের তথ্য-প্রমাণ রয়েছে বললে পরে আবার দেখা করতে বলেন।

সে অনুযায়ী শুক্রবার (৪ আগস্ট) আইসিপি বিজিবি ক্যাম্পে অন্য একজন সাংবাদিকসহ গেলে তাকে চলে যেতে বলে আজিজকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বুকে, পিঠে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেন কর্নেল আরিফ। রিপোর্টের তথ্য-প্রমাণ স্বরূপ ভিডিও ফুটেজ, ছবি, ভয়েস রেকর্ড নিয়ে গেলে সেগুলো না দেখে উল্টো যাচ্ছেতাই ভাষায় তাকে গালি দিয়ে পেটানো হয়। ভয়-ভীতি দেখানো হয় ফেন্সিডিল দিয়ে মামলা করার ও পুলিশে দেওয়ার। যদিও পাশে থাকা বিজিবির অন্য সদস্যদের কাছে তাৎক্ষণিক আজিজ সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা খারাপ কোনও রেকর্ড নেই বলে জানান।

এ বিষয়ে লে. কর্নেল আরিফের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আজিজুল হক যে রিপোর্ট করেছেন সেটা ঠিক নয়। ওনাকে ক্যাম্পে ডেকে বিষয়টি জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো, কোনও রকম মারধর করা হয়নি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত