সিলেটটুডে ডেস্ক

২২ এপ্রিল, ২০১৯ ১৫:২৪

লক্ষ্মীপুরে দগ্ধ তরুণী শাহিনুর মারা গেছেন

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলায় আগুনে দগ্ধ তরুণী শাহিনুর আক্তার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

সোমবার (২২ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া।

তিনি বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এর আগে লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে পাটারিরহাট এলাকায় রোববার বিকেলে স্ত্রীর স্বীকৃতি চাওয়ায় স্বামী সালাহউদ্দিন শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন দগ্ধ শাহিনুর।

এ ঘটনায় সালাহউদ্দিনের দুই ভাইকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তিরা হলেন- সালাহউদ্দিনের ভাই আবদুর রহমান বিশ্বাস ও আলাউদ্দিন।

আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন। এ বিষয়ে এখনও কোনও মামলা দায়ের করা হয়নি।

দগ্ধ শাহিনুর স্থানীয় সংবাদকর্মীদের জানিয়েছিলেন, চট্টগ্রামের রাউজান থানার নতুনহাট এলাকার সোনাগাজী গ্রামে তার বাড়ি। সে একই গ্রামের জাফর আহমেদের মেয়ে। দুই বছর আগে মোবাইল ফোনে লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের পাটারিরহাট এলাকার মোহর আলীর ছেলে সালাহউদ্দিনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কয়েক মাস পরে রাউজানে তাদের বিয়ে হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তিনি শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার কথা বললেও তাতে কোনও সাড়া দেননি স্বামী সালাহউদ্দিন। পরে শুক্রবার রাতে তিনি একাই ছুটে আসেন কমলনগরের পাটারিরহাটে স্বামীর বাড়িতে। সেখানে এসে তিনি দেখেন সালাহউদ্দিনের স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ আলাদা সংসার রয়েছে। পরে স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবি করলে সালাহউদ্দিন তার সঙ্গে সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেন।

প্রত্যাখ্যাত হয়ে শাহিনুর দুই দিন ধরে ওই এলাকায় স্বীকৃতির দাবি আদায়ে জনে জনে ঘুরতে থাকেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সালাহউদ্দিন তাকে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বিভিন্নভাবে হুমকি দেন। পরে স্থানীয় চরফলকন ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার মো. হাফিজ উল্লাহ ও গ্রাম পুলিশ আবু তাহের বিষয়টি সুরাহা করে দেবেন আশ্বাস দেন। এ অবস্থায় রোববার বিকালে সালাহউদ্দিন বাড়ির পাশের একটি সয়াবিন ক্ষেতে শাহিনুরকে ডেকে নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন।

ইউপি মেম্বার হাফিজ উল্লাহ জানান, স্ত্রীর স্বীকৃতি চাওয়া তরুণীর কাছে বিয়ের প্রমাণ হিসেবে কোনও কাগজপত্র ছিলো না। তাই তাকে কাগজপত্র নিয়ে দেখা করার কথা বলে ফিরিয়ে দেই। ফিরিয়ে দেওয়ার কিছু সময় পরেই তার অগ্নিদগ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় কমলনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে দেই।

লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার আ. স. ম. মাহাতাবউদ্দিন জানান, দগ্ধ তরুণীকে পুলিশের দায়িত্বে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে পুলিশের তদন্ত চলছে।



আপনার মন্তব্য

আলোচিত