সিলেটটুডে ডেস্ক

১৭ জুলাই, ২০১৯ ১৫:৩১

ঢাকা-বেনাপোল রুটের ট্রেন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করলো বেনাপোল-ঢাকা রুটের ট্রেন 'বেনাপোল এক্সপ্রেস'।

বুধবার (১৭ জুলাই) বেলা ১২টা ২২ মিনিটে  ঢাকার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এই ট্রেনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

একই সময় ঢাকা-রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে বর্ধিত বিরতিহীন আন্তঃনগর ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ ট্রেনও উদ্বোধন করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বাঁশিতে ফু দিয়ে এবং সবুজ পতাকা উড়িয়ে ট্রেন দুটির শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোফাজ্জল হোসেন। এছাড়া রেলপথ উন্নয়নের ওপর একটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।

বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশনে স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, ঝিকরগাছার এমপি ডা. অধ্যাপক নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক শামসুজ্জামান, শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যান ও সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক মঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামানসহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনের পর বেলা সোয়া একটায় ট্রেনটি বেনাপোল থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এ যাত্রায় বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক শামসুজ্জামানের নেতৃত্বে সরকারি কর্মকর্তারা ছিলেন।

বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ১০৪টি টিকিট বিক্রি হয়েছে বলে বেনাপোল রেলস্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান জানিয়েছেন।

বেনাপোল এক্সপ্রেসে রয়েছে নতুন ১২টি কোচ। এর মধ্যে দুটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। প্রচলিত সুইং ডোরের পরিবর্তে এসব কোচে রয়েছে নিরাপদ স্লাইডিং দরজা।

দেশের প্রথম প্রতিবন্ধীবান্ধব এই ট্রেনের অন্যতম নতুন বৈশিষ্ট্য হলো- বায়ো-টয়লেট সংযোজন। ট্রেনটিতে প্রতিবন্ধী যাত্রীদের হুইল চেয়ারসহ চলাচলের সুবিধার্থে থাকছে প্রশস্ত দরজা (মেইন ও টয়লেট দরজা) এবং নির্ধারিত আসনের সুবিধা। প্রতিটি কোচ স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি এবং অত্যাধুনিক যাত্রী সুবিধা সম্বলিত। প্রতিটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচে আধুনিক ও উন্নতমানের রুফ মাউন্টেড এয়ার কন্ডিশনার ইউনিট এবং এয়ার কার্টেইনের ব্যবস্থা রয়েছে।

যাত্রী সাধারণের জন্য আধুনিক ও মানসম্মত চেয়ার, বার্থ, স্টেয়ার, পার্সেল রেক, টিভি মনিটর হ্যাঙ্গার, ওয়াইফাই রাউটার হ্যাঙ্গার, মোবাইল চার্জারের ব্যবস্থা রয়েছে। ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি ১২টি কোচ দ্বারা চলবে।

ট্রেনটিতে এসি সিট, এসি চেয়ার ও শোভন চেয়ার শ্রেণির সর্বমোট ৮৯৬টি (৭৯৫ নং ট্রেনের ক্ষেত্রে) এবং এসি বার্থ, এসি চেয়ার ও শোভন চেয়ার শ্রেণির সর্বমোট ৮৭১টি (৭৯৬ নং ট্রেনের ক্ষেত্রে) আসনের ব্যবস্থা থাকবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান পরিবহন তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজ বলেন, ৮৯৬ আসনের এই ট্রেন প্রতিদিন বেনাপোল স্টেশন থেকে ছেড়ে যশোর, ঈশ্বরদী জংশন ও ঢাকা বিমানবন্দরে যাত্রী ওঠানো-নামানোর জন্য সাময়িক বিরতি দিয়ে শেষ গন্তব্যস্থল কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে থামবে।

এ ট্রেনের শোভন চেয়ারের ভাড়া ৫৩৪ টাকা, তাপানুকূল চেয়ার ১০১৩ টাকা, তাপানুকূল প্রথম শ্রেণি ১২১৩ টাকা এবং তাপানুকূল বার্থ টিকেটের দাম রাখা হয়েছে ১৮৬৯ টাকা।

তিনি বলেন, নতুন এই ট্রেনে বেনাপোল থেকে ঢাকা যেতে সময় লাগবে আট ঘণ্টা। বেনাপোল থেকে দুপুর ১টায় ট্রেনটি ছাড়বে আর ঢাকায় পৌঁছাবে রাত ৯টায়।

আবার রাত ১২টা ৪০ মিনিটে ঢাকার কমলাপুর থেকে ছেড়ে সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে বেনাপোল পৌঁছাবে।

ট্রেনের যাত্রী নাভারনের ছাত্রলীগ নেতা রুমেল সরদার, মোখলেছুর রহমান ও বেনাপোল পৌর কাউন্সিলার মিজানুর রহমান বলেন, এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। পরিবহনের (বাস) চেয়ে ট্রেনে যাতায়াত নিরাপদ ও আরামদায়ক। ট্রেনে যাতায়াত করতে সবাই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। এই ট্রেনের যাত্রী হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে। সেই সাথে তারা বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশনেত্রী শেখ হাসিনাকে সাধুবাদ জানান।

বেনাপোলের বিশিষ্ট সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান বলেন, ইতিহাসের সাক্ষী হতেই এই ট্রেনের যাত্রী হয়েছি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত