সিলেটটুডে ডেস্ক

৩১ জুলাই, ২০১৯ ১৫:৪৩

জবানবন্দি প্রত্যাহার চেয়ে মিন্নির আবেদন

বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তাঁর স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি আদালতে দেওয়া তাঁর ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহার চেয়ে বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে আবেদন করেছেন।

বুধবার (৩১ জুলাই) সকালে আদালতে মিন্নির উপস্থিতিতে তাঁর আইনজীবী এই আবেদন করেন।

আদালত সূত্র জানায়, আজ রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ধার্য তারিখ ছিল। এ জন্য এই মামলার ১৪ আসামিকে নিয়মিত হাজিরা দিতে আদালতে আনা হয়। মামলায় গ্রেপ্তার এক আসামি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় সে যশোরের কিশোর সংশোধনাগারে আছে।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিন্নি ও এই মামলার বাকি ১৩ আসামিকে আদালতে আনা হয়। প্রথমে ১৩ আসামি এবং পরে মিন্নিকে পৃথকভাবে আদালতে আনা হয়। আয়শাকে বহনকারী প্রিজনভ্যানটি আদালতের সামনে পৌঁছানোর পরপর চার নারী পুলিশ সদস্য তাঁকে দুই পাশ থেকে ধরে ভ্যান থেকে নামান এবং আদালতকক্ষে নিয়ে যান। আদালতের কার্যক্রম শেষ হলে আবার ওই চার নারী পুলিশ সদস্য ধরে তাঁকে প্রিজনভ্যানে তুলে ১০টা ৪১ মিনিটের দিকে কারাগারের উদ্দেশে রওনা হয়। অন্য আসামিদের এরপর আদালত থেকে কারাগারে নেওয়া হয়। নিয়মিত হাজিরা থাকায় ৫ মিনিটের মধ্যে এই মামলায় আদালতের কার্যক্রম শেষ হয়। তবে সকাল থেকেই আদালত এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আয়শা ও অন্য আসামিদের আদালতে আনা-নেওয়া করা হয়।

মিন্নির আইনজীবী বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী আসলাম জানান, এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার মিন্নি তাঁর জবানবন্দি প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেন। মূল নথি নিম্ন আদালতে না আসায় জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. সিরাজুল ইসলাম গাজী মিন্নির জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন শুনানির জন্য আগামী ১৪ আগস্ট পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন।

কী কী কারণ দেখিয়ে জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন জানানো হয়েছে—এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘যেহেতু মামলাটি স্পর্শকাতর, তাই কারণগুলো এই মুহূর্তে আমরা বলতে চাচ্ছি না।’

এর আগে মঙ্গলবার মিন্নির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান। ২৩ জুলাই আয়শার পক্ষে ওই জামিন আবেদন করা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন রিফাত শরীফকে। পরে তিনি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। তাতে প্রধান সাক্ষী করা হয় রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নিকে। কিন্তু মিন্নির শ্বশুর মামলা দায়েরের ১৮ দিন পর ১৩ জুলাই এই হত্যাকাণ্ডে মিন্নি জড়িত—এমন দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করার পর মামলার তদন্ত নাটকীয় মোড় নেয়।

এই মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। মামলার দুই নম্বর আসামি রিফাত ফরাজীকে পুলিশ ৩ জুলাই গ্রেপ্তার দেখায়।

পুলিশ জানায়, এই মামলায় এ পর্যন্ত ১৫ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত ৮ জন এবং সন্দেহভাজন ৭ জন। তাঁরা সবাই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত