সিলেটটুডে ডেস্ক

১০ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১৮:২০

মানবাধিকার দিবসে মহিলা পরিষদ পাবনার মানববন্ধন

“ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়ন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ-আসুন এ অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই” এ আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, পাবনা জেলা শাখার উদ্যোগে, লিগ্যাল এইড ও আন্দোলন উপ-পরিষদের আয়োজনে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় পাবনা প্রেসক্লাবের সামনে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ (২৫ নভেম্বর - ১০ ডিসেম্বর) ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস, ২০১৯ উপলক্ষে এক মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ পাবনা জেলা শাখার সভাপতি পূরবী মৈত্রের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ পাবনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক, কামরুন নাহার জলি, রোটারিয়ান পিপি এম এ জলিল, বাঁচতে চাই এর নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রব মন্টু, সূচীতা সমাজ কল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক নাসরিন পারভীন, পড়শী নির্বাহী পরিচালক মালা সরকার, উদ্দিপনা নির্বাহী পরিচালক আলেয়া বেগম, মহিলা পরিষদ পাবনা জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুন নাহার জোসনা, লিগ্যাল এইড সম্পাদক শরিফা খাতুন সুখী, প্রচার সম্পাদক করুনা নাসরিন, প্রশিক্ষণ গবেষণা ও পাঠাগার সম্পাদক রোজিনা আকতার, কার্যকরী সদস্য রওশন আক্তার মিন্টু ও আনোয়ারা খানম প্রমুখ।

অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি, বাঁচতে চাই, সুচীতা সমাজ কল্যাণ সংস্থা, রোটারি ক্লাবের প্রতিনিধিসহ বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ পাবনা জেলা, পাড়া ও তৃনমূলের নেত্রীবৃন্দ। মানববন্ধন পরিচালনা করেন লিগ্যাল এইড সম্পাদক শরিফা খাতুন সুখী ও সমন্বয় করেন এ এম এস কিবরিয়া।

মানববন্ধনে বক্তাগণ মহিলা পরিষদের সুস্পষ্ট দাবি তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রশাসনকে আরও তৎপর হতে হবে। নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে পারিবারিক মূল্যবোধ গড়ে তোলার সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার নারীকে দায়ী করার মানসিকতা পরিহার করতে সামাজিক সচেতনমূলক কর্মসূচি নিতে হবে। মহামান্য হাই কোর্ট বিভাগের নির্দেশনা অনুসারে ঘটনাস্থলকে মুখ্য বিবেচনা না করে ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন বা এ ধরনের আমলযোগ্য অপরাধের ঘটনায় কোন বৈষম্য, বিলম্ব ছাড়াই তাৎক্ষনিকভাবে থানায় অভিযোগ লিপিবদ্ধ করতে হবে।

বক্তারা বলেন, ধর্ষণের শিকার নারীর প্রতি সংবেদনশীল হয়ে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রকে ধর্ষণের শিকার নারীর পাশে দাড়াতে হবে এবং তার মানসিক শক্তি বৃদ্ধি, চিকিৎসাসহ ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে সহায়তা করতে হবে। নারী ও কন্যার প্রতি নির্যাতনকারীদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রশাসনিক আশ্রয়, প্রশ্রয় দেয়া বন্ধ করতে হবে। অপরাধীকে চিহ্নিত করে পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে বয়কট এবং আইনের আওতায় আনতে হবে; অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে পাড়া-মহল্লায় গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। অভিযোগকারী যেন অনলাইনে তার অভিযোগ নিবন্ধন করতে পারেন, সেজন্য ওয়েবসাইট চালু করতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

নিরাপদ অভিবাসনসহ দেশে ও বিদেশে নারী শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। মানবপাচার রোধ ও মানবপাচারের শিকার নারীদের দেশে ফিরিয়ে আনা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণের বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। ধর্ষণের মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার করতে হবে। প্রচলিত আইন পরিবর্তন করে ধর্ষণকারীকেই ধর্ষণ করে নাই এ বিষয়টি প্রমাণ করতে হবে মর্মে বিধান আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার মামলার সাক্ষীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তার লক্ষ্যে আইন প্রণয়ন করতে হবে। উত্ত্যক্তকরণ ও যৌন নিপীড়ন বন্ধে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের রায় বাস্তবায়ন ও রায়ের আলোকে আইন প্রণয়ন করতে হবে। পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২ এর বাস্তবায়ন করতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় নারীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ধর্ষণের শিকার নারীর ডাক্তারি (মেডিকো-লিগ্যাল) পরীক্ষার ক্ষেত্রে ‘দ্বি-আঙ্গুলের পরীক্ষা’ বা ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ নিষিদ্ধ করে দেওয়া মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের বাস্তবায়ন করতে হবে। নারী ও কন্যার প্রতি উত্ত্যক্তকরণ, যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণসহ সকল প্রকার সহিংসতা প্রতিরোধে এগিয়ে আসুন। নারী ও কন্যার প্রতি ধর্ষণ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান ও গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলুন। পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন, ২০১০-র বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার সকল পদক্ষেপ নিতে হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত