তপন কুমার দাস, বড়লেখা

১০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২৩:১৭

মৌলভীবাজার-১: ঋণে ডুবে আছেন মিঠু

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা-জুড়ী) আসনে বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়া জেলা বিএনপির সহসভাপতি শিল্পপতি নাসির উদ্দিন মিঠু ঋণে জর্জরিত। তার সর্বমোট ঋণের পরিমাণ ২১ কোটি ৩২ লাখ ৭৭ হাজার ১০৬ টাকা।

নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় এমন তথ্য দিয়েছেন তিনি। হলফনামা থেকে জানা গেছে, মিঠু বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ২১ কোটি ৩২ লাখ ৭৭ হাজার ১০৬ টাকা ঋণ নিয়েছেন। তার বার্ষিক আয় ১৭ লাখ ৭ হাজার ৪’শ ১৩ টাকা। শিক্ষাগত যোগ্যতা- স্নাতক।

পেশায় ব্যবসায়ী মিঠুর রয়েছে চা-বাগান, চা-প্রস্তুতকারক, ডেভেলপার, সিকিউরিটি সার্ভিস এবং আমদানি ও রপ্তানির ব্যবসা। অতীতে তার বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও মামলার চার্জশিট থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন। এখন তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।

এই আসনে প্রাথমিকভাবে দলের মনোনয়ন পেয়েছিলেন দুইজন। এর মধ্যে সাবেক প্রতিমন্ত্রী আইনজীবী এবাদুর রহমান চৌধুরী অসুস্থতার কারণে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ায় প্রথমবারের মতো তিনি চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন।

হলফনামার তথ্য অনুসারে, কৃষিখাত থেকে মিঠুর বছরে আয় হয় ৭৫ হাজার টাকা, বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট বা দোকানসহ অন্যান্য ভাড়া বাবদ বছরে আয় হয় ৯ লাখ ৮৩ হাজার ৪৭ টাকা, ব্যবসা থেকে আয় হয় ২ লাখ ৮৯ হাজার ৩৬৬ টাকা, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে পারিতোষিক ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। সব মিলে তার বার্ষিক আয় দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৭ হাজার ৪’শ ১৩ টাকা। এছাড়া তার ওপর নির্ভরশীলদের ব্যবসা থেকে বছরে আয় ৬ লাখ ৮৩ হাজার ৮২০ টাকা।

অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে মিঠুর কাছে নগদ রয়েছে ৩৪ লাখ ২০ হাজার ৯৮৫ টাকা ও স্ত্রীর নামে রয়েছে ৮ লাখ ১০ হাজার ৩৩৩ টাকা। তার নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ১০ লাখ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ৫৫ হাজার ৮৪০ টাকা। বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির শেয়ার হিসেবে মিঠুর কাছে রয়েছে ৫২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং স্ত্রীর নামে ১৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।

এছাড়া তার নামে একটি পাজারো, একটি জিপ এবং একটি কার আছে। এর মধ্যে পাজারো ও জিপের মূল্য ৩১ লাখ ৬৭ হাজার ৯২০ টাকা এবং একটি কারের মূল্য ২১ লাখ ৪১ হাজার ৯৪ টাকা। নিজের নামে স্বর্ণ, অন্যান্য মূল্যবান ধাতু ও পাথর নির্মিত অলংকার রয়েছে ২৫ হাজার টাকার এবং স্ত্রীর রয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার। তার নামে ইলেকট্রনিক সামগ্রী রয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকার এবং স্ত্রীর নামে ৫০ হাজার টাকার। এছাড়া তার নামে আসবাবপত্র আছে ৮০ হাজার টাকার এবং স্ত্রীর নামে ৫০ হাজার টাকার।

স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে মিঠুর কৃষি জমি আছে ৬০ লাখ টাকার (৭২০ শতাংশ)। তার অকৃষি জমি আছে ৯০ লাখ টাকার (১৮০ শতাংশ) এবং স্ত্রীর নামে আছে ১০ লাখ (১২৫ শতাংশ)। যৌথ মালিকানায় দুটি দালান আছে। এর মধ্যে একটির মূল্য ১ কোটি ৫২ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং অপরটির মূল্য ২৫ লাখ টাকা। নিজের নামে একটি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে, যার মূল্য ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তার নামে চা-বাগান, রাবার বাগান, মৎস্য খামার আছে ১ কোটি টাকার এবং স্ত্রীর নামে আছে ৫০ লাখ টাকার।

মিঠু ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৭৯ হাজার ১০৬ টাকা, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক থেকে ৪৫ লাখ টাকা এবং লংকাবাংলা ফাইন্যান্স থেকে ২২ লাখ ১৮ হাজার টাকা এবং যৌথভাবে অগ্রণী ব্যাংক থেকে ১১ কোটি ১৮ লাখ টাকা এবং ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে ৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত