সিলেটটুডে ডেস্ক

১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৮:০৬

অনেক খারাপ-ভালো নির্বাচন দেখেছি, এমন দেখিনি: ড. কামাল

নির্বাচনের প্রচার প্রচারণায় ধানের শীষের প্রার্থীরা অন্যান্য দলের মতো সমান সুযোগ পাচ্ছে না অভিযোগ করে গণফোরামের সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল নির্বাচন কমিশনকে বলেছেন, আমি ৭০' সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নির্বাচনের এজেন্ট ছিলাম। ৫৫ বছরের অভিজ্ঞতায় এমন পরিস্থিতি দেখিনি। সন্ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ঢাকায় কেবল একটি দলের পোস্টার আছে। অন্য দলের প্রার্থীদের কোনো পোস্টার নেই। অনেক খারাপ-ভালো নির্বাচন দেখেছি। এমন দেখিনি।

নির্বাচন কমিশনে সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) এক বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা ও অন্য কমিশনারদের এ কথা বলেন ড. কামাল হোসেন।

বৈঠক শেষে ড. কামাল ব্রিফিং করেন। ব্রিফিংয়ে ড. কামাল বলেন, কোথাও আমাদের ধানের শীষের প্রার্থীরা নামতে পারছে না। আমাদের প্রার্থীরা মাঠে নামলেই তাদের ওপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালানো হচ্ছে। ঢাকা শহরের কোথাও ধানের শীষের পোস্টার নেই।’

ড. কামাল বলেন, ‘আমাদের প্রার্থীদের ওপর কোথায় কোথায় হামলা চালানো হয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য, সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ও ছবি দিয়েছি।’

‘সংবিধান অনুসারে নির্বাচন কমিশন অনেক ক্ষমতার অধিকারী। তারপরও নির্বাচন কমিশন কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না সেটাই তো বুঝতে পারছি না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সরকার চায় না আমরা নির্বাচন করি। তারা চায় আমরা যেন ভোটের মাঠ থেকে বেরিয়ে আসি। কিন্তু আমরা মরে গেলেও নির্বাচন বর্জন করব না। আমি যদি মারাও যায় তারপরও আমার লাশ নিয়ে কেন্দ্রে গিয়ে যেন ভোট দেওয়া হয়।’

ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ এই নেতা বলেন, ‘আমাদের অভিযোগ সম্পর্কে জেনে সিইসি বিব্রত হয়েছে। আমরা বলেছি, শুধু বিব্রত হলে চলবে না। এগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’

ড. কামাল বলেন, ‘আমি ৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নির্বাচনী এজেন্ট ছিলাম। গত ৫৫ বছরে নির্বাচন নিয়ে আমার অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। প্রত্যেকটি নির্বাচনেই আমি কমবেশি ভূমিকা রেখেছি। কিন্তু এইরকম নির্বাচন কখনো কোথাও হতে দেখি নাই।’

তিনি বলেন, ‘কোথাও নির্বাচনের ন্যূনতম পরিবেশ নেই। আমরা ন্যূনতম পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ইসিকে আহ্বান জানাই।’

বর্তমান সরকার বিষয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘বর্তমান সরকার নির্বাচনকালীন সময়ে সব দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু তারা রুটিন ওয়ার্ক ছাড়া অন্যসব কাজ করার এখতিয়ার রাখে না। সংবিধান অনুযায়ী এখন সকল ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের হাতে। কিন্তু তারা কেন এই ক্ষমতার প্রয়োগ করছে না সেটা আপনারা (সাংবাদিক) ইসিকে জিজ্ঞাসা করেন।’

‘সারাদেশে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার-হয়রানি করা হচ্ছে। আমরা বলেছি, আজকেই আপনারা চিঠি দেন যেন আগামীকাল থেকে এটা বন্ধ করা হয়’ বলেন ড. কামাল।

বেলা ২টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বৈঠক শুরু হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে এই বৈঠকে চার কমিশনার ছাড়াও নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিত রয়েছেন।

ঐক্যফ্রন্টের প্রধান ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, আ স ম আবদুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, নজরুল ইসলাম খান, ড. মঈন খান, মোস্তফা মহসিন মন্টু, জাফরুল্লাহ চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ আরও কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে সারাদেশের ৩০ জেলায় ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি সংক্রান্ত লিখিত অভিযোগ তুলে ধরা হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত