১৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২৩:২৪
সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ) আসনের বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের প্রার্থী শাহীনুর পাশা চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আবাসন ব্যবসার কথা বলে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে প্রতারণা করে ৩২ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করা হয়। সেই মামলায় মঙ্গলবার সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত এই পরোয়ানা জারি করেন।
এ ব্যাপারে বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আসমা বেগম সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শাহীনুর পাশা সিলেট শহরে বসবাস করায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল করতে সিলেট কোতোয়ালি থানা ও তাঁর নিজ এলাকা সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, মামলার বাদী ঢাকার বনানীর বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী তালুকদার একজন যুক্তরাজ্যপ্রবাসী। ১৩ ডিসেম্বর আদালতে তিনি প্রতারণার অভিযোগে মামলা করেন। বাদীর অভিযোগ, শাহীনুর পাশার সঙ্গে যুক্তরাজ্যে তাঁর পরিচয় হয়। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের পাশে তাঁর ‘মাতৃভূমি হাউজিং ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড’ এর নামে একটি আবাসন প্রকল্প আছে জানিয়ে ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে মোহাম্মদ আলী তালুকদারকে প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হওয়ার প্রস্তাব দেন। মোহাম্মদ আলী ২০১২ সালের ৪ নভেম্বর থেকে কয়েক দফায় ৩২ লাখ ২০ হাজার টাকা দেন। কিন্তু শাহীনুর পাশা তাঁকে না জানিয়ে একপর্যায়ে প্রকল্পটি বিক্রি করেন। এরপর থেকে বারবার যোগাযোগ করলে শাহীনুর টাকা দেননি। চলতি বছর শাহীনুর টাকা পরিশোধের জন্য ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের একটি চেকে পাঁচ লাখ টাকা দেন। একই ব্যাংকের ভিন্ন ভিন্ন তারিখে আরও তিনটি চেকসহ মোট ২০ লাখ টাকার চেক দেন। কিন্তু এসব চেক নগদায়নের জন্য ব্র্যাক ব্যাংকের গুলশান শাখায় জমা দিলে ডিজঅনার হয়। এরপর শাহীনুরের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করলে তিনি জানান, ৩২ লাখ ২০ হাজার টাকার লভ্যাংশসহ ফেরত দেবেন। গত ২২ অক্টোবর শাহীনুর পাশা তাঁর পরিচিত এই মামলার সাক্ষীর উপস্থিতিতে পাওনা টাকার কথা অস্বীকার করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি মামলা করেছেন।
মামলার অভিযোগ ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ব্যাপারে জানতে চাইলে শাহীনুর পাশা চৌধুরী বলেন, ‘মামলা দায়েরের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে মোহাম্মদ আলী তালুকদার আমার কাছে টাকা পান।’
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ২০ জুলাই সুনামগঞ্জ-৩ আসনে উপনির্বাচনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নেতা শাহীনুর পাশা চৌধুরী চারদলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এম এ মান্নানের সঙ্গে হারেন। এবার বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের প্রার্থী মনোনীত হয়ে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে তিনি নির্বাচন করছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান সাংসদ, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান।
আপনার মন্তব্য