শাহ শরীফ উদ্দিন

০৪ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:৪৪

মনসুর-মোকাব্বিরের আসনে কি আবার নির্বাচন?

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্বাচিত সদস্যরা বৃহস্পতিবার শপথ নিয়েছেন। তবে শপথ নেননি ঐক্যফ্রন্ট থেকে বিজয়ী ৭ জন সাংসদ। যাদের মধ্যে সিলেট বিভাগের দুজন রয়েছেন। বৃহস্পতিবার শপথ নেননি সিলেট-২ আসনের জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খান ও মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত সুলতান মোহাম্মদ মনসুর।

বৃহস্পতিবার ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, তাদের নির্বাচিত সাংসদরা শপথ গ্রহণ করবেন না। ফলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, এসব আসনে কি আবার নির্বাচন হবে? পুনঃভোট হবে সিলেট বিভাগের দুটি আসনে? যদিও সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির খানের দু'জন এখনও এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলেননি।

বৃহস্পতিবার অন্য সাংসদদের সাথে সিলেট বিভাগের মোট ১৯টি আসনের ১৭ জন নবনির্বাচিত সাংসদ শপথ গ্রহণ করেন। সকাল ১১টার কিছু সময় পর সংসদ ভবনের শপথকক্ষে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রথমে নিজে নিজের শপথ গ্রহণ করেন। এর পর নির্বাচিতদের শপথবাক্য পাঠ করান তিনি। তবে এদিন শপথ করেননি মোকাব্বির খান ও সুলতান মনসুর।

যদিও সংবিধান অনুযায়ী সংসদ অধিবেশন শুরুর ৯০ দিনের মধ্যে তাদের শপথ গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। এরমধ্যে শপথ গ্রহণ না করলে তাদের সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়ে যাবে। তখন পুণরায় নির্বাচন হবে এসব আসনে।

বৃহস্পতিবার শপথ না নিলেও প্রথম সংসদ অধিবেশনের ৯০ দিনের মধ্যে শপথ নেয়া যাবে জানিয়ে সিলেট-২ আসনের ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী মোকাব্বির খান সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আগামী ৫ জানুয়ারি আমার দল গণফোরামের মিটিং হবে। এ মিটিংয়ের পর সিদ্ধান্ত হবে শপথ নিবো কি না। তবে এখনো ৯০ দিন সময় আছে শপথ নেয়ার জন্য।'

তিনি বলেন, গণফোরামের মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত যা হবে তা ঐক্যফ্রন্টের মিটিংয়ে জানানো হবে। এর পর দেখা যাবে কি হবে।'

যদিও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ইতোমধ্যে ভোটের ফল প্রত্যাখ্যান করে শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে পুনঃনির্বাচনের জন্য আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলামের শপথ না নেয়ার ঘোষণার বিষয়ে মোকাব্বির খান বলেন, 'মির্জা ফখরুল কি বললেন সেটা আমার দেখার বিষয় না। আমার দলের প্রধান ড. কামাল হোসেন যে সিদ্ধান্ত নিবেন আমি সেটাই মেনে নিবো।'

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার-২ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী সুলতান মনসুরের কাছে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি পার্টির মিটিংয়ে ব্যস্ত আছেন বলে জানান।

তবে সম্প্রতি গণমাধ্যমের কাছে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর জানিয়েছিলেন, নির্বাচনী এলাকা থেকে তিনি মাত্রই ঢাকায় এসেছেন। জোটের সঙ্গে আলাপ করে তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।

সুলতান মনসুর বলেন, শপথ নেওয়ার সময় তো আর পেরিয়ে যাচ্ছে না। পরেও নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

এদিকে, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার ইসিতে স্মারকলিপি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এতে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের ফল বাতিল ও নতুন নির্বাচনের দাবি জানানো হয়েছে।

গত ৩০ ডিসেম্বর ২৯৯ আসনে ভোট হয়। তার মধ্যে একটি আসনে কয়েকটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত থাকায় নির্বাচন কমিশনের গেজেটে ২৯৮টি আসনের বিজয়ীদের নাম ও ঠিকানা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ জোটের আসন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮৮টি। বিপরীতে বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আসন মাত্র সাতটি।

মহাজোটের শরিকদের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৫৬টি, জাতীয় পার্টি ২২টি, ওয়ার্কার্স পার্টি তিনটি, জাসদ দুটি, বিকল্পধারা দুটি এবং বাংলাদেশ জাসদ, তরীকত ফেডারেশন ও জাতীয় পার্টি (জেপি) একটি করে আসন পেয়েছে। এ ছাড়া বিএনপি পাঁচটি, গণফোরাম দুটি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তিনটি আসন পেয়েছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত