সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

১২ মার্চ, ২০১৬ ১৪:১১

পদক চাওয়াটা আমার লোভের নয়, ক্ষোভের প্রকাশ ছিলো : নির্মলেন্দু গুণ

তাঁকে স্বাধীনতা পদক না দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে কবি নির্মলেন্দু গুণের ফেসবুক স্ট্যাটাসের পর সামাজিক মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়।  অনেকে সমালোচনা করে লিখেন, পুরষ্কারের জন্য কবির এমন লালায়িত হওয়া বেমানান। কেউ কেউ অবশ্য বলেন কবি না পাওয়ার আফসোস থেকে এমনটা বলে থাকতে পারেন।

বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। এতে তিনি অসম্মানিত বোধ করেন। শুধু তাই-ই নয়, তার ‘সহপাঠিনী’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর ‘বিরক্তি’ও প্রকাশ করেন।

তবে সব আলোচনা-সমালোচনার জবাব কবি নির্মলেন্দু গুণ নিজেই আবার আরেকটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে দিয়েছেন। শনিবার (১২ মার্চ সকালে) করা পোষ্টে কবি তাঁর আগের পোস্টের কারণে তৈরি হওয়া প্রতিক্রিয়া নিয়ে লিখেছেন:


"বহু বাসনায় প্রাণপণে চাই,
বঞ্চিত করে বাঁচালে মোরে।"
---রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

আমার স্বাধীনতা পদকের আর দরকার নাই। ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। ধন্যবাদ আমার প্রকাশ্যে পদক দাবি করার বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ নাগরিকবৃন্দ, যাদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম হলেও, একেবারে অনুল্লেখ্য নয়।

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহণের ভিতর দিয়ে জিয়া-প্রবর্তিত রাজনীতিতে বেগম খালেদা জিয়া, এরশাদ প্রবর্তিত রাজনীতিতে যেভাবে এরশাদ বা রওশন এরশাদ বৈধ হয়েছেন-- জেনারেল জিয়া প্রবর্তিত পদকও সেইভাবে বৈধতা লাভ করেছে।
সেই কারণে এই পদক গ্রহণে দোষ দেখি না।
এই পদক চালুর ইতিহাসটা নব প্রজন্মের অনেকেই জানেন না বলেই সেই ঘটনাটির অবতারণা করেছিলাম।

যারা ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে পদকলোভী বলে নিন্দামন্দ করেছেন, -তাদের আশ্বস্ত করতে চাই এই বলে যে, আমার এই পদক চাওয়াটা আমার লোভের প্রকাশ নয়, ক্ষোভের প্রকাশ ছিলো। আমার মৌল চরিত্র বিরোধী এই বিষয়টা কেউ কেউ ধরতে পারেননি। তারা আমাকে অনেকের সংগে গুলিয়ে ফেলে আমার প্রতি অবিচার করেছেন।

আমি তিন বছর আগে সুইডেনে গিয়ে ওখানকার একটি আলোচনা-সভায় বলেছিলাম, আপনারা কোনো বেশি বয়স্ক লেখককে নোবেল পুরস্কার দিয়ে তাঁর শেষজীবনের শান্তি, স্বস্তি ও স্বাধীনতা নষ্ট করবেন না। তাঁকে শান্তিতে থাকতে দিন।
মনে হচ্ছে, স্বাধীনতা পদক প্রশ্নে স্বদেশেও আমার একই অবস্থানে থাকা উচিত ছিল। এই পদকের জন্য আমি একটু বড়ই বটে।

একটা ছোট জিনিসের জন্য আপনাদের বড় কষ্ট দেয়া হলো। সেজন্য আমি দুঃখিত। আশা করি আপনারা আমার কবিত্বের ওপর আস্থা হারাবেন না। আমার কবিতা পড়বেন।
আমার কবিতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে আপনাদের নিজেদেরই ক্ষতি হবে।

"আমারে এড়িয়ে বাড়াও নিজেরই ক্ষতি।"
--- সুধীন্দ্রনাথ দত্ত।

নয়াগাঁও
12/03/16



 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত